প্রকাশ সিনহা, কলকাতা: শুভেন্দু অধিকারীর প্রাক্তন নিরাপত্তারক্ষীর রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় তদন্তভার হাতে নিল সিআইডি।
আজই পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে যাচ্ছে সিআইডির একটি দল। তদন্তকারী অফিসাররা কথা বলবেন মৃত শুভব্রত চক্রবর্তীর পরিবারের সঙ্গে।
গত ৭ জুলাই কাঁথি থানায় এফআইআর দায়ের করেন শুভেন্দু অধিকারীর প্রাক্তন নিরাপত্তারক্ষীর স্ত্রী। এরপর শুক্রবার এই ঘটনায় খুন ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের ধারায় মামলা রুজু করে কাঁথি থানার পুলিশ।
অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর করে তদন্ত শুরু করেছে কাঁথি থানার পুলিশ। ঘটনার প্রায় তিন বছর পর লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন মৃতের স্ত্রী সুপর্ণা।
২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর। নিজের সার্ভিস রিভলভার থেকে গুলি করে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন শুভেন্দু অধিকারীর নিরাপত্তারক্ষী শুভব্রত চক্রবর্তী। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরের দিন অ্যাপোলো হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
৩ বছর পরে, স্বামীর মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলে স্ত্রী অভিযোগপত্রে লিখেছেন, প্রথম থেকেই স্বামীর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে সন্দেহ ছিল।
প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর দেহরক্ষী হওয়া সত্ত্বেও, গুলিবিদ্ধ শুভব্রতকে কলকাতায় নিয়ে আসতে দেরি কেন হল, তা স্পষ্ট নয়, বলে অভিযোগপত্রে প্রশ্ন তুলেছেন সুপর্ণা।
কিন্তু, এতদিন কেন মুখ খোলেননি তিনি? শুভেন্দুর প্রাক্তন দেহরক্ষীর স্ত্রী দাবি করেছেন, শুভেন্দু শক্তিশালী। সবাই ওনার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পান। তাই সেই সময় আমিও কিছু বলে উঠতে পারিনি।
চাঞ্চল্যকরভাবে এফআইআরে এ-ও দাবি করা হয়, দেহরক্ষীর মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তোলায় শুভেন্দু অধিকারী অসন্তুষ্ট হয়েছেন বলে পরিবারের এক সদস্যকে জানান রাখাল বেরা নামে এক ব্যক্তি।
তা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় জনৈক রাখাল বেরা নামে এক ব্যক্তি বলেন, এই বয়ানে শুভেন্দু অধিকারী অসন্তুষ্ট হয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে দাবি, এই রাখাল বেরাই সম্প্রতি সেচ দফতরের আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন।
এছাড়াও, মৃত দেহরক্ষীর স্ত্রীর দায়ের করা অভিযোগপত্রে দাবি করা হয়েছে, এ বছরের ১৫ মে হিমাংশু মান্না ও স্বদেশ দাস তাঁদের বাড়িতে এসে জানতে চান, ‘কোথাও থেকে কোনও ফোন এসেছিল কি না?’
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই আমফানের ত্রাণের ত্রিপল চুরির অভিযোগে শুভেন্দু অধিকারীর নামে কাঁথি থানায় এফআইআর দায়ের হয়।
পাশাপাশি, তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতির সভাপতির পদ থেকে অপসারিত হন শুভেন্দু। তাঁর বিরুদ্ধে স্পেশাল অডিট শুরু করেছে রাজ্য অর্থ দফতর।