কলকাতা: সত্যিই কি বাজারে বাজারে প্লাস্টিক-ডিম ঘুরে বেড়াচ্ছে? নাকি নিছকই গুজব? এই জল্পনার মধ্যেই দুটি সরকারি রিপোর্টে উঠে এল, ডিমের আসল ফান্ডা! অর্থাৎ, নমুনা পরীক্ষা করে ডিমে কোনও প্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।


তিলজলার বাসিন্দা অনিতা কুমার সম্প্রতি যেসব ডিম নিয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন, নিজস্ব ল্যাবে সেগুলির পরীক্ষা করে কলকাতা পুরসভা। পরীক্ষা করা হয় অন্যান্য ডিমও। সূত্রের খবর, পরীক্ষায় প্রমাণ মিলেছে, অনিতার কেনা ডিম ও সাধারণ ডিমের খোসা একই। দুটিই তৈরি হয়েছে ক্যালসিয়াম কার্বোনেট দিয়ে। খোসায় প্লাস্টিকের কোনও অস্তিত্ব নেই।

অন্যদিকে, এই ঘটনায় ধৃত ব্যবসায়ী শামিম আনসারির দোকান থেকে যে ৩৪টি ডিম বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল, সেগুলি ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ অ্যানিমেল অ্যান্ড ফিসারি সায়েন্সেস’-এ পাঠায় প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতর। সূত্রের খবর, ডিম-পরীক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয় যে রিপোর্ট তৈরি করেছে, তাতে ডিমে প্লাস্টিকের কোনও উল্লেখ নেই। ডিম স্বাভাবিক। রিপোর্টে এও বলা হয়েছে, ডিমের ওমলেট এবং সেদ্ধ করে খেয়ে, স্বাদের কোনও ফারাক ধরা পড়েনি!

বিশেষজ্ঞদের মতে, গরম বা অন্য কোনও কারণে ডিম ডিহাইড্রেট হয়ে যায়।

ফলে ডিমের জলীয় অংশ কমে গিয়ে, সাদা অংশের ঘনত্ব বেড়ে যায়। তখন সেটা ‘gel’-এর মতো মতো দেখতে লাগে।

ডিমকে ঘিরে যে সন্দেহের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, তার নেপথ্যে মুরগীরও ভূমিকা রয়েছে!

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রথম ও শেষ দিকে মুরগি যে ডিম পারে, সেগুলিতে ক্যালসিয়াম কম থাকে। ফলে, ওই সব ডিমের খোসা পাতলা খোসা পাতলা হয়ে যায়। ডিমের  আকৃতিও বদলে যায়। তখন কুসমকে রক্ষা করার জন্য, প্রাকৃতিক নিয়মেই ডিমের ভিতরের সাদা অংশ মোটা হয়ে যায়।

এটাকেই অনেকে প্লাস্টিক বলে ভুল করছেন বলে মত বিশেষজ্ঞদের! সন্দেহ নিরসন করতে অনেকেই ডিমের খোসা পোড়াচ্ছেন। বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, সব জিনিসেরই একটা নিজস্ব গন্ধ আছে। আতঙ্কের আবহে সেটাই হয়তো প্লাস্টিকের গন্ধ বলে মনে হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে আশ্বস্ত করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীও। তিনি এদিন বলেছেন, প্লাস্টিক ডিমের কথা বলা হচ্ছে। তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেছি। কে রটাল? গুজবে কান দিতে দেব না। প্লাস্টিক ডিমে খরচ বেশি? কেন বেশি খরচের প্লাস্টিক ডিম বিক্রি করবে? গণেশও একসময় দুধ খেয়েছে।সেরকম কেউ দুধ খেয়ে নেয়নি তো? ডাল মে কুছ কালা তো নেহি হ্যা? বাংলার ডিম স্বাভাবিক...প্রচুর ডিম খান।

বুধবারের মধ্যে যন্ত্র আসার পর ডিমের, কুসুমও পরীক্ষা করে দেখবে কলকাতা পুরসভা।