কলকাতা: ২০১৬’র বিধানসভা ভোটে আসন ভাগাভাগি করে ভরাডুবি হয়েছে। তার পরে আর জোট গড়ে লড়েনি কংগ্রেস ও বাম। বিধানসভা ভোটের পর রাজ্যে যে ক’টি উপনির্বাচন হয়েছে, প্রায় সবকর্টিতেই বাম-কংগ্রেসের গ্রাফ নিম্নমুখী। এর মধ্যে, দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তো বিজেপি একেবারে ২ নম্বরে উঠে এসেছে।  এই পরিস্থিতিতে, আসন্ন ১৪ই মে-এর পুরভোটে, ফের আসন সমঝোতার পথে বাম-কংগ্রেস। কাঁথি আসনের ফল বেরোনোর পর সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রর কথায় ফের কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, যেখানে তাঁরা শক্তিশালী নন, সেখানে বিজেপি-তৃণমূলকে যাঁরা লড়বেন তাঁদের সমর্থন করা হবে।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও বলেছেন, নিচুস্তরে বামপন্থীদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন কংগ্রেসের স্থানীয় নেতারা।

পুরসভার ভোট যেহেতু স্থানীয় ভোট, তাই পলিটব্যুরো বা হাইকম্যান্ডের অনুমতির জন্য বসে না থেকে আসন সমঝোতার ফর্মুলা অনেকটাই ঠিক করে ফেলেছেন স্থানীয় বাম-কংগ্রেস কর্মীরা।

সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদের ডোমকল পুরসভায় ২১টি আসনের মধ্যে সিপিএম লড়তে চাইছে ১১টিতে। বাকি দশটি তারা ছাড়তে চায় কংগ্রেসের জন্য।

যদিও এ নিয়ে এখনও চূড়ান্ত ঐকমত্য হয়নি। তবে, বাম-কংগ্রেস কেউই যে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেবে না, তা একরকম চূড়ান্ত। যা নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের মুর্শিদাবাদের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, দুই দলেরই জামানত জব্দ হবে।

সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে যে ফর্মুলা তৈরি হয়েছে, তাতে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ পুরসভার ২৭টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস লড়তে পারে ১৮টিতে। বাকি ৯টিতে প্রার্থী দিতে পারে বামেরা।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার পূজালি পুরসভায়, গতবার ১৬টির মধ্যে মাত্র একটি আসন পেয়েছিল সিপিএম। বাকি ১৫টিতেই জেতে তৃণমূল। ২০১৬’র বিধানসভা ভোটের ফেলের নিরিখে পূজালি পুরসভার ২টি ওয়ার্ডে সিপিএম এগিয়ে।

সূত্রের খবর, এই প্রেক্ষাপটে বাম ও কংগ্রেসের স্থানীয় নেতৃত্ব ঠিক করেছে, ১৬টি আসনের মধ্যে কয়েকটিতে লড়বে বাম, কয়েকটিতে কংগ্রেস। বাকিগুলিতে স্থানীয় নির্দল প্রার্থীদের সমর্থন করবে বাম-কংগ্রেস।

ডোমকল, রায়গঞ্জ, পূজালি ছাড়াও পাহাড়ের চারটি পুরসভায় এবার ভোট।

এর মধ্যে দার্জিলিং পুরসভায় ৩২টি আসন,কালিম্পঙে ২৩টি, কার্শিয়ং পুরসভায় ২০টি আসন। এবং মিরিকে ১৫টি। সবমিলিয়ে পাহাড়ের চার পুরসভায় মোট ৯০টি আসন।

সূত্রের খবর, এই নব্বইটি আসনের মধ্যে ২০-২২টি তে প্রার্থী দেবে বলে ঠিক করেছে সিপিএম।

পাহাড়ের পুরভোটে এবার তৃণমূলের সঙ্গে জিএনএলএফ-এর সমঝোতার সম্ভাবনা। আবার, গোখা জনমুক্তি মোর্চা ও বিজেপির বোঝাপড়া হতে পারে বলে জল্পনা তুঙ্গে। এদের বিরুদ্ধে যাঁরা দাঁড়াবেন, সিপিএম তাঁদেরই সমর্থন করবে বলে ঠিক করেছে।

যদিও তৃণমূল কংগ্রেস-বামের সমঝোতাকে গুরুত্ব দিতে চাইছে না তৃণমূল।