দীপক ঘোষ, সমিত সেনগুপ্ত, ও ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, কলকাতা: পেগাসাস ইস্যুতে তৃণমূলের পাশে কংগ্রেস। মমতার দিল্লি সফরের আগে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত। “চূড়ান্ত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে মোদি সরকার।“ অভিষেকের ছবি দিয়ে ট্যুইট কংগ্রেসের। পাশে দাঁড়ানোয় কংগ্রেসকে স্বাগত জানিয়েছে তৃণমূল। ‘খেলা হবে’, কংগ্রেসের ট্যুইটটি রিট্যুইট করে প্রতিক্রিয়া ডেরেক ও’ব্রায়েনের।
২১ জুলাই, বিজেপি বিরোধী জোট গঠনের ডাক দেওয়ার পর, সোমবার দিল্লি যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৯ জুলাই রাজধানীতে বিজেপি বিরোধী দলগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন তৃণমূলনেত্রী। এই প্রেক্ষাপটে রবিবার, পেগাসাসকাণ্ডে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোন হ্যাকিংয়ের অভিযোগ ঘিরে মোদি সরকারের কড়া সমালোচনা করে ট্যুইট করল কংগ্রেস।
ওই ট্যুইটে লেখা হয়েছে, ‘শত্রুদের চোখে চোখে রাখতে হয়’। এই প্রবাদ মেনে চলতে গিয়ে বাড়াবাড়ি করে ফেলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। ট্যুইটটির সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি ছবিও পোস্ট করা হয়েছে। তাতে লেখা, আপনি ক্রোনোলজিটা বুঝুন। পেগাসাস স্পাইওয়্যারের নিশানায় কে? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো। কখন? ২০২১। কেন? পশ্চিমবঙ্গের ভোট। সবার নীচে লেখা- সীমাহীন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে মোদি সরকার।
কংগ্রেসের করা এই ট্যুইটটি শেয়ার করে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন লিখেছেন, খেলা হবে।
বুধবার ২১ জুলাইয়ের ভার্চুয়াল মঞ্চ বিজেপি বিরোধীদের একজোট হওয়ার বার্তা দেন তৃণমূলনেত্রী। তিনি বলেন, আমাদের এককাট্টা হতে হবে। ব্যক্তিগত স্বার্থ ভুলতে হবে। দেশকে বাঁচাতে হবে, মানুষকে বাঁচাতে হবে। তৃণমূল নেত্রী যখন এই আবেদন রাখছেন, তখন দিল্লিতে বসে তৃণমূলের আমন্ত্রণে উপস্থিত হয়ে সেই বক্তব্য শুনতে দেখা যায়, কংগ্রেসের পি চিদম্বরম, দিগ্বিজয় সিংয়ের মতো হেভিওয়েট নেতাদের। এর কয়েকদিনের মধ্যেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোন হ্যাকিংয়ের অভিযোগ তুলে সরব হল কংগ্রেস। এই পরিস্থিতিতেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে জাতীয় রাজনীতিতে ফের কাছাকাছি আসছে কংগ্রেস ও তৃণমূল?
কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ফোনে আড়ি পাতার প্রতিবাদ মুখ্যমন্ত্রী ও রাহুল গাঁধী করেছেন। তিনি বারবার বলেছেন কোথাও একটি স্নুপিং হচ্ছে। আজ প্রমাণিত হয়ে গেছে। আজ তার বিরুদ্ধে সকলকে কংগ্রেস হোক বা অন্য বিরোধী দল হোক। সবাই চাইছে একটা বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি তৈরি হোক।
দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, কংগ্রেস এই ইস্যুটি তোলার জন্য ধন্যবাদ। এইভাবেই সম্পর্ক ভাল হবে। বিজেপি অবশ্য এ নিয়ে দু’পক্ষকেই নিশানা করেছে। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, কংগ্রেসের অস্তিত্ব সঙ্কট। আগামী নির্বাচনে হয়ত বিরোধী তকমা থাকবেও না। বৈশাখী নিয়ে হাঁটার চেষ্টা করছে। কেন্দ্রে কংগ্রেস-তৃণমূল যদি কাছাকাছি আসে, তাহলে প্রশ্ন উঠছে, এ রাজ্যে বাম-কংগ্রেসের জোটেরই বা কী হবে? সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শমীক লাহিড়ির কথায়, রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, কংগ্রেস-তৃণমূল সক্ষ কিনা, সেটা ২০২৪ এখনও দেরি আছে। কংগ্রেস কিছু জানায়নি।