শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার : অক্সিজেন মজুত থাকা সত্ত্বেও, শুধুমাত্র স্বাস্থ্যকর্মীদের অনুপস্থিতির কারণে, অক্সিজেনের অভাবে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠল কোচবিহারের মহারাজা জিতেন্দ্র নারায়ন মেডিক্যাল কলেজ (এমজেএন) হাসপাতালে। সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতের পরিবার। তদন্তের আশ্বাস দিয়ে সুপারের দাবি, অবস্থা সঙ্কটজনক হয়ে যাওয়াতেই ওই রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।


করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে অক্সিজেনের অভাবে বহু সংখ্যক রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে সারা দেশে। তা নিয়ে একাধিকবার একাধিক আদালতে চরম ভর্ত্‍‍সনার মুখে পড়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এবার সেই অভিযোগের উলটপুরাণ দেখা গেল এরাজ্যের কোচবিহার এমজেএন হাসপাতালে। ওয়ার্ডে অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত। অথচ রোগীকে তা দেওয়ার জন্য কোনও স্বাস্থ্যকর্মীই নাকি উপস্থিত নেই। আর সেকারণেই তীব্র শ্বাসকষ্টে ভুগে মৃত্যু হয়েছে রোগীর। এমনই অভিযোগে সরব হয়েছে একটি পরিবার।


জ্বর ও শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে রবিবার কোচবিহার এমজেএন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তিরিশ বছরের মনোজ ওঝাকে। করোনা পরীক্ষায় রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় বিশেষ ওয়ার্ডে রাখা হয় তাঁকে। মঙ্গলবার ভোরে মনোজের মৃত্যু হয়। সুপারের কাছে চিকিৎসায় গাফিলতির লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে মৃত রোগীর পরিবার। মৃতের পিসতুতো দাদা রাসবিহারী গোস্বামী বলেছেন, 'আজ ভোর চারটে নাগাদ অক্সিজেন একেবারে নিচে নেমে যায়। কিন্তু সে সময় অক্সিজেন দেওয়ার জন্য নার্স বা স্টাফ কেউই ছিলেন না। সেকারণেই আমার ভাইয়ের মৃত্যু। রাতেও সুস্থ ছিল। কথা হয়েছিল ফোনে।' তদন্তের আশ্বাস দিয়ে সুপারের বক্তব্য, রোগীর অবস্থা খারাপ ছিল। অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৪০ এর নিচে নেমে যায়। চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু বাঁচানো যায়নি। তবে পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত হবে। দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আর এমজেএন হাসপাতালে এভাবে গাফিলতির জেরে রোগীমৃত্যুর অভিযোগ সামনে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে গোটা এলাকায়। এমনিতেই করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা ও তারমাঝে এভাবে অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু কোচবিহারে ছড়িয়েছে উদ্বেগও। আপাতত দেখার তদন্তে কী  তথ্য উঠে আসে।