কলকাতা : পাতিপুকুর, হাওড়ার পর এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাতগাছিয়া। ফের মৃতদেহ নিয়ে হয়রানির অভিযোগ। পরিবার সূত্র খবর, গতকাল ভোর ৫টায় আর্যপাড়া এলাকায় করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। দীর্ঘক্ষণ কেউ মৃতদেহ উদ্ধার করেনি বলে অভিযোগ করেছে মৃতার পরিবার। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর দেহ সৎকারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। বজবজের ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতির উদ্যোগেই দেহ নিতে আসা হয়েছে বলে খবর। এরপরে মহেশতলায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় বৃদ্ধার। যদিও পুলিশের দাবি, বৃদ্ধার মৃত্যু সংক্রান্ত কোনও তথ্যই মেলেনি।
একই ছবি খড়্গপুরেও। সেখানে ১০ ঘণ্টা ধরে পড়ে রইল করোনা আক্রান্তের মৃতদেহ। খড়্গপুরের বলরামপুরে ঘটনাটি ঘটেছে। পরিবারের অভিযোগ, এদিন ভোর ৫টা নাগাদ করোনা আক্রান্ত গোবিন্দ মিশ্রের মৃত্যু হয়। ফোন করে প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি।
দীর্ঘক্ষণ মৃতদেহ পড়ে থাকলেও কেউ আসেনি বলে দাবি করেছে মৃতের পরিবার। প্রায় ১০ ঘণ্টা বাড়িতেই মৃতদেহ পড়ে থাকার পর দুপুর ৩টে নাগাদ মৃতদেহ নিয়ে যান স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা। যদিও প্রশাসনের তরফে দীর্ঘক্ষণ দেহ পড়ে থাকার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে খড়্গপুরের বিডিওর দাবি, খবর পাওয়া মাত্রই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
করোনার মৃতদেহ নিয়ে হয়রানির ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও কখনও কৃষ্ণনগর, কখনও হাওড়া, কখনও আবার খাস কলকাতা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা করোনা রোগীর দেহ নিয়ে গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে সর্বত্রই।
প্রশাসন দাবি করছে, করোনা সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই, তাহলে দীর্ঘক্ষণ মৃতদেহ পড়ে থাকার অভিযোগ উঠছে কেন? এ ক্ষেত্রে বাড়িতে মৃত্যু হলে ডেথ সার্টিফিকেট, করোনার রিপোর্ট ইত্যাদি একাধিক বিষয় নিয়ে কিছু সমস্যা তৈরি হচ্ছে বলে দাবি করছে প্রশাসনের একাংশ। যদিও হয়রানি কমাতে ইতিমধ্যেই একাধিক নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য সরকার। জানানো হয়েছে, বাড়িতে মৃত্যু হলে যে চিকিৎসকের অধীনে রোগীর চিকিৎসা চলছিল সেই চিকিৎসকই ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করতে পারবেন।
পাশাপাশি, করোনা আক্রান্ত হয়ে যে রোগীর মৃত্যু হচ্ছে তাঁর পরিবারের যাতে কোনওরকম অসুবিধা না হয় সেই কারণে এবার ধাপা থেকে ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করছে কলকাতা পুরসভা। ধাপাতে এসডব্লুএম-এর (SWM) একটি ঘর নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এখান থেকে করোনা রোগীর ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করা হচ্ছে।