কলকাতা: গঙ্গাসাগর মেলা উদযাপন নিয়ে নেই উৎসবের খামতি। এদিন গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে দীর্ঘ আইনি যুক্তির লড়াই চলল কলকাতা হাইকোর্টে। তবে সোমবার শুনানি শেষ হলেও রায় দান স্থগিত রাখা হয়। গঙ্গাসাগর মেলা কমিটিতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে রাখা নিয়ে আপত্তি তুলেছে রাজ্য সরকার। অন্যদিকে, গঙ্গাসাগর মেলায় সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কায় মামলাকারীরা দাবি করেন, পুণ্যার্থীদের অনেকেই বিধি মানছেন না। সুপারস্প্রেডার হবে গঙ্গাসাগর।তাই আদালত স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করে মেলা বন্ধ করুক।
এদিন মামলার শুরুতেই তরজা চলে শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে। ‘গঙ্গাসাগর মেলার কমিটিতে কেন শুভেন্দু অধিকারী? তা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে হাইকোর্টে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন রাজ্যের। কমিটিতে শুভেন্দুকে রাখার বিরুদ্ধে সওয়াল রাজ্য সরকারের। বলা হয়, ‘বিরোধী দলনেতাকে কমিটিতে রাখায় রাজনৈতিক রং যুক্ত হয়েছে। রাজ্য সরকার কোনও রাজনৈতিক বিতর্ক চায় না। কেউ রাজনৈতিক স্বার্থে গঙ্গাসাগর যাবেন, সেটাও ঠিক নয়’।
বরং, কমিটিতে রাখতে চিকিৎসকদের নামের প্রস্তাব একাধিক মামলাকারীর। বলা হয়েছে, 'আদালত স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করে মেলা বন্ধ করুক। পুণ্যার্থীদের অনেকেই বিধি মানছেন না, সুপারস্প্রেডার হবে গঙ্গাসাগর। প্রচুর ভিড় হচ্ছে বলে অভিযোগ, নিয়ন্ত্রণে আনা রাজ্যের দায়িত্ব নয়?'। তবে 'রাজ্যের পদক্ষেপে ভরসা করে মেলা বন্ধে সায় দেওয়া হয়নি’, রায় দান স্থগিত রেখে গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে মন্তব্য হাইকোর্টের।
কোভিড পরিস্থিতিতে গঙ্গাসাগর মেলায় অনুমতি দিলেও, সামাজিক দূরত্ববিধি, জমায়েত না করার মতো শর্ত বেঁধে দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। কোথাও কোনও ভুলচুক চোখে পড়লে মেলা বাতিল করা হতে পারে বলেও জানিয়ে দিয়েছে। তার জন্য তিন সদস্যের কমিটিকে নজরদারির দায়িত্ব সঁপেছে আদালত। কিন্তু ওই কমিটিতে বিজেপি-র বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুকে রাখা নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়েছে।
সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য সোমবার আদালতে একাধিক আবেদন জমা পড়ে। তার মধ্যে নবান্নের তরফেও পৃথক আবেদন জমা দেওয়া হয়। তাতে রাজ্য জানায়, শুভেন্দু এক জন আদ্যোপান্ত রাজনৈতিক মানুষ। বিরোধী দলনেতা তিনি। তাই গঙ্গাসাগর মেলার নিরপেক্ষ কমিটিতে তাঁকে কোনও ভাবেই রাখা উচিত নয়। কারণ তাতে গঙ্গাসাগর মেলায় রাজনীতির রং লাগবে। অযথা রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি করা হবে এবং কমিটির আশ্রয় নিয়ে কিছু মানুষ রাজনৈতিক ফায়দা তুলবেন। তাই এই কমিটিতে শুভেন্দুর অন্তর্ভুক্তি মেনে নেওয়া সম্ভব নয় বলে সাফ জানিয়ে দেয় রাজ্য।