কলকাতা: অটো দুর্ঘটনার গুরুতর জখম এক তরুণীর যেভাবে প্রাণ বাঁচল, তা কার্যত অবিশ্বাস্য। চিকিৎসকদের চেষ্টায় আপাতত স্থিতিশীল ওই তরুণীর শারীরিক অবস্থা। ওই তরুণীর জটিল অস্ত্রোপচার হল কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। অটো দুর্ঘটনায় অটোর রড ভেঙে এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে গিয়েছিল বুক।
৫ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে তরুণীকে বাঁচালেন এসএসকেএমের চিকিৎসকরা। শিরদাঁড়া ও লিভার ফুটো করে দেয় অটোর রড। ১৪ জনের মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করে হয় অস্ত্রোপচারে বের করা হল রড। আপাতত স্থিতিশীল ধামাখালির বাসিন্দা তরুণী। রবিবার অটো দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন ২১ বছরের তুহিনা পরভীন।
জানা গেছে, প্রথমে তুহিনাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসকরা সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে চলে ওই অপারেশন।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই এসএসকেএম হাসপাতালে অন্তঃসত্ত্বার জটিল অস্ত্রোপচার সফল হয়েছিল। টিউমার অপারেশনের পর, সন্তানের জন্ম দেন ওই মহিলা। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়, মা, শিশু দু’জনেই সুস্থ আছে।বিয়ের ৫ বছর পর প্রথম সন্তান। তাও টেস্ট টিউব প্রক্রিয়ায়। কিন্তু, পথটা অত্যন্ত কঠিন ছিল। প্রথমে সব ঠিক থাকলেও প্রসবের দিন যত এগিয়ে আসে, তত কঠিন সমস্যার মুখে পড়তে হয় অন্তঃসত্ত্বাকে। পেটে অসহ্য যন্ত্রণা হত তাঁর। এজন্য এসএসকেএম হাসপাতালের দ্বারস্থ হয় পরিবার। কারণ খুঁজতে গিয়ে চিকিত্সএকরা দেখেন, থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের পিছনে রয়েছে একটি টিউমার। এই পরিস্থিতিতে প্রথম টিউমারটিকে বের করার কথা ভাবেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু, সেই অপারেশন যে সহজ নয়, তা জানতেন চিকিত্সাকরা। কারণ, ততদিনে, গর্ভস্থ শিশুর বয়স ২৬ সপ্তাহ পার হয়ে গেছে। এই সময় অপারেশনে মা ও সন্তান দু’জনেরই জীবনের ঝুঁকি ছিল। অন্তঃসত্ত্বা যে কোনও সময় কোমায় চলে যেতে পারতেন।মাত্র ১৫ মিনিটে বের করে আনা হয় টিউমার। এরপর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন অন্তঃসত্ত্বা। তবে, অপারেশন হলেও, সদ্যোজাতর জন্ম নিয়ে কিছু জটিলতা থাকে। এরপর চিকিত্সককরা ঠিক করেন, সিজার করে সদ্যোজাতকে বের করা হবে। সেইমতো, দেড় ঘণ্টা ধরে বিরল অপারেশনটি হয়। সুস্থ সন্তানের জন্ম দেন মা। অপারেশন ছিল নিঃসন্দেহে কঠিন অপারেশন। এই পরিস্থিতির মধ্যেও এই অপারেশন করে পিজির মুকুটে নতুন পালক যুক্ত হল।