কলকাতা: দিল্লি যাত্রা প্রসঙ্গে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে ট্যুইটারে কটাক্ষ কৃষ্ণনগরের তৃণমূল মহুয়া মৈত্রর। তৃণমূল সাংসদ লেখেন, আঙ্কলজি বলেছেন যে, তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। বাংলার রাজ্যপাল সাহেব দয়া করে আর ফিরবেন না।
উল্লেখ্য, গতকাল দিল্লি যাওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা রাজ্যপালের চিঠি ঘিরে ফের নবান্ন ও রাজভবনের সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছে। দিল্লি সফরের ঠিক মুখে অত্যন্ত তাৎপ্র্যপূর্ণভাবেই ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে ফের সুর চড়িয়েছেন রাজ্যপাল। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা কড়া চিঠিতে জগদীপ ধনকড় অভিযোগ করেছেন, বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসা, রক্তপাত, মানবাধিকার লঙ্ঘন থামছে না। নারী নির্যাতন, বিরোধীদের সম্পত্তি ধ্বংস হয়েই চলছে। অথচ, এই নিয়ে আপনি আশ্চর্যজনকভাবে নীরব এবং নিষ্ক্রিয়। রাজ্যপালের অভিযোগ, বারবার দৃষ্টি আকর্ষণের পরেও, মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় একদিনও এ ব্যাপারে আলোচনা করেননি।
রাজ্যপালের চিঠির কড়া জবাব দিয়েছে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রদফতর। ট্যুইটে বলা হয়েছে, যাবতীয় নিয়ম-নীতি ভেঙে মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠি জনসমক্ষে এনেছেন রাজ্যপাল। এরইসঙ্গে ট্যুইট করে গণমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। চিঠির বিষয়বস্তু প্রকৃত ঘটনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং মনগড়া। চিঠিতে যেভাবে বিকৃত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে তাতে রাজ্য সরকার স্তম্ভিত।
এবার রাজ্যপালকে কটাক্ষ করে ট্যুইট করলেন মহুয়া মৈত্র। এর আগে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগে ট্যুইট করেছিলেন মহুয়া মৈত্র। এর জবাবে পাল্টা ট্যুইট করে রাজ্যপাল বলেছিলেন, ওএসডি পদে ৬ আত্মীয়কে নিয়োগের কথা তথ্যগতভাবে ভুল। এর জবাবে মহুয়া প্রশ্ন তুলেছিলেন, কীভাবে, কোন পথে রাজভবনে ঢুকলেন তাঁরা?
‘স্বজনপোষণের’ অভিযোগ ঘিরে এভাবে ট্যুইট-যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র ও রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।
মহুয়া মৈত্র তাঁর ট্যুইটার অ্যাকাউন্টে রাজ্যপালের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি তথা ৬ জন ওএসডি-র এই নামের তালিকা প্রকাশ করেন। প্রথমে নাম, তারপর তাঁদের পরিচয়।এরা প্রত্যেকেই রাজ্যপালের আত্মীয় অথবা ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করেন তৃণমূল সাংসদ।এর একদিন পরই আর রাজ্যপাল জবাব দেন।ট্যুইট করে ধনকড় বলেন, ওএসডি পদে ৬ আত্মীয়কে নিয়োগ করার কথা বলা হচ্ছে, যা তথ্যগতভাবে ভুল। এদের মধ্যে ৩টি রাজ্য থেকে আসা চারজন ভিন্ন জাতের। এঁরা কেউই আমার নিকট আত্মীয় নন, আমার রাজ্যেরও নন। উদ্বেগজনক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি থেকে নজর ঘোরাতে এসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
এর এক ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যপালকে ফের আঙ্কলজি সম্বোধন করে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে মহুয়া মৈত্র বলেন,এঁদের পূর্বসূরী কারা এবং কীভাবে এঁরা রাজভবনে ঢুকলেন, তা এখনই জানান। বিজেপির আইটি সেলও আপনাকে বাঁচাতে পারবে না। আমার মনে হয় না, আপনার আর উপরাষ্ট্রপতি হওয়া হবে।
এর কিছুক্ষণ বাদে রাজভবনের আধিকারিকদের একটি তালিকা ফের ট্যুইট করেন মহুয়া মৈত্র। ফের একবার রাজ্যপালের উদ্দেশে বলেন, মার্ক করা নামগুলি কাদের এবং কে তাঁদের ওএসডি পদে নিয়োগ করল, তা স্পষ্ট করতে অনুরোধ করব।