দক্ষিণ দিনাজপুর: হায়দরাবাদ গণধর্ষণকাণ্ডের ছায়া এবার দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জে।  প্রথমে গণধর্ষণ, তারপর নাবালিকাকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ। এই ঘটনায় এখনও অবধি ওই নাবালিকার প্রেমিক সহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সোমবার সকালে দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ এলাকার বেলখরের একটি কালভার্টের কাছে উদ্ধার হয় থেকে উদ্ধার হয় নাবালিকার অগ্নিদগ্ধ মৃতদেহ। দেহটি কুকুর-শিয়ালে খুবলে খেয়েছিল বলে অভিযোগ। ঘটনাটি সামনে আসার পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ধৃতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার সকালে ফুলবাড়িতে ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয়রা।

পরিবার সূত্রে খবর, রবিবার দুপুরে ফুলবাড়ি বাজারে যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বেরোয় ১৭ বছরের নাবালিকা। বিকেল থেকে তার ফোন সুইচড অফ হয়ে যায়। সন্ধ্যা থেকে খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া পাওয়া যায়নি। সোমবার সকালে দগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধারের কথা জানতে পরেন পরিবারের লোকেরা। বিকেলে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে মর্গে সনাক্ত করেন মৃতদেহ।

মৃতদেহ উদ্ধার করতে গিয়ে, ঘটনাস্থল থেকে একটি প্লাস্টিকের বোতল পায় পুলিশ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন পুলিশ সুপার। নাবালিকার শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে দাবি। পুলিশ আরও জানায়, যে জায়গায় নাবালিকার দগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে, সেই জয়গা কিশোরীর বাড়ি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে। জায়গাটা ফুলবাড়ি বাজারে যাওয়ার পথেও পড়ে না। নাবালিকা কী করে সেখানে গেল, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

ঘটনায় মাহাবুর মিঞা, পঙ্কজ বর্মন, ও গৌতম বর্মন নামে তিন অভিযুক্তে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত তিন জনই ভিন রাজ্যে একসঙ্গে কাজ করতেন। মাহাবুরের সঙ্গে ওই নাবালিকার সম্পর্ক ছিল। রবিবার মাহাবুর নির্যাতিতাকে বেলখড় এলাকায় নিয়ে যায় বলে অনুমান। পরে সেখানে আসে পঙ্কজ ও গৌতম। সেখানেই নাবালিকাকে গণধর্ষণ করে খুন করা হয়। এরপর প্রমাণ লোপাট করতে, বাইক থেকে পেট্রোল নিয়ে মৃতদেহ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এরপর শেয়াল-কুকুরে সেই মৃতদেহ খুবলে খায় বলে অভিযোগ।

ধৃতদের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ বালুরঘাট আদালতের। ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে পথ অবরোধ করেন মৃতার পরিবার ও পরিজনরা। এই ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। 'হায়দরাবাদের ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ করেছিল গোটা দেশ । দিনহাটার ঘটনা নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে বুদ্ধিজীবী, ছাত্রসমাজ সবাই চুপ। পশ্চিমবঙ্গের মেয়েদের কি কোনও সম্মান নেই? কটাক্ষ করে মন্তব্য করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।'