কলকাতা: বিগত বছরগুলোয় এই সময় ঢাকের তালে জমজমাট থাকে শিয়ালদা স্টেশন চত্বর। এবছর সেখানে শুনশান। ট্রেন না চলায় আসেনি ঢাকির দল। অনেকে আবার করোনা শঙ্কায় গ্রামের বাইরে বেরতে চাইছেন না। এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়েছেন পুজো উদ্যোক্তারা।


মহালয়ার পর থেকেই শিয়ালদা স্টেশন চত্বরে শোনা যেত আগমনীর সুর। ঢাকের শব্দ হয়ে উঠত শহরের হৃদস্পন্দন৷ দূর দূরান্তের জেলা থেকে হাজির হতেন ঢাকিরা। তাঁদের তাল, লয়, ছন্দ, ভঙ্গিমায় বহুমাত্রিকতা৷ কখনও আবার ঢাক, কুড়কুড়ির যুগলবন্দি৷ কৃষ্টি-সংস্কৃতি, আবেগ-উৎসব মিলে-মিশে একাকার৷ সুর-সংঘাতে জমজমাট হয়ে উঠত শিয়ালদা স্টেশন-চত্বর। সেখানেই হত বায়না। দরে পোষালে সোজা মণ্ডপের দিকে রওনা। পুজোর ৫টা দিন, থাকা-খাওয়ার ঠিকানা।

কিন্তু, করোনা আবহে এবছর সব ওলট-পালট। সংক্রমণ-শঙ্কায় চলছে না ট্রেন। ফলে ঢাকি-শূন্য শিয়ালদা স্টেশন। যে আওয়াজ না শুনলে পুজো শুরু হয় না। শিয়ালদায় দূর-দূরান্ত থেকে ঢাকিরা আসেন। বায়না করে। ট্রেন চলছে না। করোনায় ঢাকিরা আসছেন না। শিয়ালদা শুনশান। কেউ আসতে পারছেন না ট্রেন চলছে না বলে। কেউ আবার সংক্রমণের ভয়ে এবছর গ্রামের বাইরে বেরতে চাইছেন না। এত বছরের পুরনো অভ্যাসে, ছেদ ফেলল মারণ ভাইরাস।

ঢাকিদেরও যেমন মন ভালো নেই, তেমন, ঢাকি-সঙ্কটে সমস্যায় পড়েছেন পুজো উদ্যোক্তারাও। পার্কসার্কাস ময়দান দুর্গোৎসবের উদ্যোক্তা হেমন্ত দে বলছেন, ‘যাঁরা আমাদের প্রতিবছর ঢাক বাজায়, তারা এবছর আসেনি। সমস্যা তো হচ্ছেই।’ কাশীবোস লেন দুর্গোত্‍সব কমিটির উদ্যোক্তা সৌমেন দত্ত বলছেন, ‘আমাদের ১২ জনের দল আসে। ৩-৪ জনকে বলেছি এসো। তোমাদের দিয়েই কাজ চালাতে হবে। তবে আসতে রাজি হচ্ছে না।’

অনেকে আবার ঢোকের বোল ডাউনলোড করে চালানোর কথাও ভেবেছেন। সকলেরই একটাই প্রার্থনা। এবছর উত্‍সব-আকাশে করোনার যে কালো মেঘ, তা যেন আর কখনও ফিরে না আসে।