কলকাতা: দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ ক্রমশ বাড়াচ্ছে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন বা ডিভিসি। আজ সকাল ৭টা থেকে ২ লক্ষ ৪৯ হাজার ৪৫০ কিউসেক হারে জল ছাড়া শুরু হয়েছে। একদিন আগেই লাল সতর্কতা জারি করেছে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়ায়, পূর্ব বর্ধমানের একাংশ, হাওড়া ও হুগলির নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা।

ডিভিসি জল ছাড়ায় পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে ভাঙল শীলাবতী নদীর বাঁধ। ঘাটাল শহর সহ ৮১টি মৌজা প্লাবিত হয়েছে। হাসপাতাল, থানা, বিডিও অফিস, স্কুল কলেজে জল ঢুকে গিয়েছে। ঘাটালের সঙ্গে জেলার বাকি অংশের যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন।

এছাড়া, দাসপুর ২ নম্বর ব্লকের ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রাম জলমগ্ন। গতকাল থেকেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক করা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনা হয়েছে। উদ্ধারকাজে নেমেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।

হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরেও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। আজ সকালে সেনপুরে দামোদরের বাঁধে ফাটল দেখা দেয়। মনসুকা ও শিবানীপুরেও নদী বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে হু হু করে জল ঢুকছে বিভিন্ন গ্রামে। দামোদরের জল বিপদসীমা ছাড়ানোয় গতকাল নদীবাঁধ উপচে আরও কয়েকটি গ্রামে জল ঢুকে পড়ে। উদয়নারায়ণপুর ব্লকের ঘোলা, হরিহরপুর, টোকাপুর, শিবানীপুর, মনসুকা সহ ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯০ টির মত গ্রাম প্লাবিত। প্রায় ৬ হাজার হেক্টর কৃষিজমি জলের তলায়। এছাড়া, বিভিন্ন খালের জল উপচে আমতা ১ ও ২ নম্বর ব্লকের বেশ কয়েকটি গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।

তবে সকাল থেকে ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় বীরভূমের বিভিন্ন নদীতে জলস্তর বিপদসীমার নীচ দিয়ে বইছে। ঝাড়খণ্ডের ম্যাসাঞ্জোর জলাধারে জলধারণ ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে থাকায় জল ছাড়ার সম্ভাবনা কার্যত নেই। ফলে তিলপাড়া ব্যারেজ থেকেও জল ছাড়ার পরিমাণ কমিয়ে আনা হয়েছে। আজ সকাল থেকে ৪৮৪ কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে। তবে লাভপুরের লাঘাটা সেতুর কাছে লাভপুর-কাটোয়া রাজ্য সড়কের ওপর কুয়ে নদীর জল বয়ে যাওয়ায় এখনও বন্ধ যান চলাচল। এদিকে, খয়রাশোলে জলবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের পেটের অসুখ সহ নানা উপসর্গ দেখা দিয়েছে।