বিটন চক্রবর্তী ও ঋত্বিক প্রধান, হলদিয়া:  প্রবল বৃষ্টিতে দুর্ভোগে পড়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার বাসিন্দারা। এখানে ৫ থেকে ৬টি ওয়ার্ড জলের তলায়। জমা জলে সমস্যায় পড়েছেন এগরার এরেন্দা এলাকার বাসিন্দারাও। সমস্যার জন্য বেহাল নিকাশিকেই দায়ী করেছেন তাঁরা।


বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে রাতভর প্রবল বৃষ্টিতে জলের তলায় পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া শহরের ৫-৬ টি ওয়ার্ড। রাস্তার ওপর দিয়ে বইছে জল। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বৈশাখি ব্লকের একাংশ ডুবে থাকায়, এখানকার ৩০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে ত্রাণ শিবিরে।  টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন পাঁশকুড়া পুরসভার কয়েকটি ওয়ার্ডও।


জমা জলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এগরা ২ নম্বর ব্লকের এরেন্দার বাসিন্দারাও। রাস্তাঘাট থেকে বাড়ির উঠোন-- সব জায়গাই জলে বন্দি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেহাল নিকাশির জন্যই তাঁদের এই যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে। দুর্ভোগে পড়েছেন বহু মানুষ। আর প্রশাসনের মুখে সেই চেনা প্রতিশ্রুতি।


ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রতিবার বর্ষা এলে এভাবেই জল যন্ত্রণা সহ্য করতে হয় তাঁদের। আদৌ কি কাটবে দুর্ভোগ? সবার মনে এখন এই প্রশ্নই ঘুরছে।


পূর্বের মতোই অবস্থা পশ্চিমেও। নিম্নচাপের নাছোড় বৃষ্টিতে পশ্চিম মেদিনীপুরের একাংশের এখন বানভাসি অবস্থা। কোথাও জলের তোড়ে ভেসে গেছে রাস্তা। 


কোথাও বাঁধ ভেঙে নেমে এসেছে বিপর্যয়। চর্তুদিকে তাকালে শুধু জল আর জল। গাড়ি প্রায় ভেসে যাওয়ার জোগাড়। শুক্রবার সকাল থেকে সড়কপথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে কেশপুর-মেদিনীপুর। 


ফুঁসছে কংসাবতী, পাড়াং। দুই নদীর জলে ভাসছে পাঁচটি কেশপুরের গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। ভেঙেছে একের পর কাঁচা বাড়ি। জলবন্দিদের উদ্ধারে নামানো হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দল।


মেদিনীপুরের মহকুমাশাসক কৌশিক চট্টপাধ্যায় বলেন, কেশপুরের অনেক জায়গায় জল জমেছে, ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে, এনডিআরএফ আসছে।  শিলাবতী নদীর বাঁধ ভাঙায় বিপাকে পড়েছেন, পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণার তিনটি অঞ্চলের বাসিন্দারা।  বিঘের পর পর চাষজমি জলের তলায় চলে যাওয়ায়, মাথায় হাত কৃষকদের। 


চন্দ্রকোণার এক বাসিন্দা বললেন, সবজি থেকে সবকিছু জলের তলায় চলে গেছে, শিলাবতী নদীর বাঁধ দুটি ভেঙেছে। শিলাবতীর মতো চোখ রাঙাচ্ছে ঝুমি নদীও। ঝুমির জলে প্লাবিত ঘাটালের মনশুকা এলাকা।  অতিবৃষ্টিতে সবংয়ের ভুয়া ব্রিজ সংলগ্ন রাস্তায় নেমেছে ধস। যার ফলে, জেলার অন্য অংশের সড়কপথে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সবং।


এলাকার বিডিও বলেন, ব্রিজের জল নেমে এসেছে নীচের দিকে, এত জল জমেছে একটা অংশ নীচের দিকে নেমে গেছে, ৫০ ফুট ধসে গেছে, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বৃষ্টি না থামলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন দুর্গত এলাকার বাসিন্দারা।