কলকাতা:  পুরুলিয়ার শিশুর শরীর থেকে একে একে সাতটি সুচ বের করলেন এসএসকেএমের চিকিৎ‍সকরা। সার্জেন সুকান্ত রায় এবং ঋষভদেব পাত্রের নেতৃত্বে প্রায় পৌনে চার ঘণ্টা ধরে চলে অপারেশন।
শনিবার তাঁকে এসএসকেএমে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার হল অপারেশন। এক জটিল অস্ত্রোপচার। লিভার সার্জেন সুকান্ত রায় বলেন, ওটিতে গিয়ে যা দেখলাম তাতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। অপারেশনে ছটি সূচ বের করা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, আরেকটি সুচ খুঁজে পাচ্ছিলাম না। শেষমেশ যকৃত থেকেই আরেকটি সুচ বের করা হয়।
বিভিন্ন রিপোর্ট খতিয়ে দেখে এ দিন সকালেই মেডিক্যাল বোর্ড অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেয়। সেই মতো এসএসকেএমের মেন ব্লক পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের ওটিতে সকাল ১০ টা নাগাদ ঢোকানো হয় শিশুটিকে।
পাঁচ জন সার্জেন এবং ২ জন অ্যানাস্থেসিস্ট মিলে শুরু করেন অপারেশন। সূত্রের খবর, সি আর্ম যন্ত্র ব্যবহার করে চিকিৎ‍সকরা দেখেন, শিশুর দেহের কোথায় কোথায় সুচগুলি রয়েছে। তারপর শুরু হয় কাটাছেঁড়া। মোট সাতটি সূচ শিশুর দেহ থেকে বের করা হয়।
এসএসকেএম অধিকর্তা অজয় রায় বলেন, অপারেশন সফল। তবে ৪৮ ঘণ্টা না কাটলে শিশুটি বিপদমুক্ত কি না বলা যাবে না। চিকিৎ‍সকদের বক্তব্য, শিশুর শরীরের মধ্যে আর কোনও সুচ নেই।
কিন্তু, একজন বাচ্চার শরীর এতগুলি সুচ ঢোকাল কে? কেন এমন অকথ্য অত্যাচার চালাল? এ নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা কাটেনি। কারণ, শিশুর মায়ের মুখে কুলুপ। তিনিও এখন এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি। পুরুলিয়ার নাদিয়ারা গ্রামে সনাতন ঠাকুর নামে এক বৃদ্ধের বাড়িতে তিনি পরিচারিকার কাজ করতেন। সেই সনাতন ঠাকুরের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই
শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ বা পকসো আইনের ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
অভিযুক্ত এই সনাতন ঠাকুর পলাতক। যার জেরে, শিশুর শরীরে সুচ ঢুকিয়ে এরকম অত্যাচার নেপথ্যে কুসংস্কার না কি অন্য কোনও কারণ তা এখনও স্পষ্ট নয়।