আশাবুল হোসেন, পূর্ব বর্ধমান: তৃণমূলে যোগ দিলেন প্রাক্তন পুলিশ কর্তা হুমায়ুন কবীর। মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের কালনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতেই রাজনীতিতে নাম লেখালেন, অবিভক্ত বর্ধমানের একসময়ের পুলিশ সুপার।
কিছুদিন আগে তৃণমূলে যোগ দেন তাঁর স্ত্রী। আগামী এপ্রিলে হুমায়ুন কবীরের চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত ২৯ জানুয়ারি চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার থাকাকালীন ইস্তফা দেন হুমায়ুন কবীর। এরপর থেকেই হুমায়ুন কবীরের রাজনীতিতে আসা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়।
চন্দনগরের সিপি পদ থেকে তাঁর সদ্য ইস্তফা জল্পনা আরও বাড়িয়ে দেয়। অবসরের কয়েক মাস আগে ভোটের মরশুমে এই ইস্তফা ঘিরে চড়তে থাকে জল্পনার পারদ। শেষমেশ এদিন কালনায় মমতার সভায় এসে যোগদান করেন প্রাক্তন এই আইপিএস।
সভার শুরুতে মুখ্যমন্ত্রীর আগেই বক্তব্য রাখেন হুমায়ুন কবীর। তিনি মমতার প্রশংসা করে বলেন, ‘মানুষের সুখে–দুঃখে, বন্যায়, আমফান ঝড়ের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তা নিজের চোখে দেখেছি। তাঁর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা অত্যন্ত সুখদায়ক। তাঁর অনুপ্রেরণায় আমি অভিভূত।’
তৃণমূলে যোগ দিয়েই এদিন বিরোধী বিজেপি–র বিরুদ্ধে তোপ দাগেন হুমায়ুন কবীর। তিনি বলেন, ‘একটা বাইরের দল এসে পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতিমনস্ক মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছে। বিজেপি বিভেদ করে ক্ষমতা দখল করতে চাইছে। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ তাদের উত্তর দেবে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের ক্ষমতায় আসবেন— এটা আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।’
খাকি উর্দি গায়ে তোলার আগে, কোলাঘাটের একটি স্কুলের শিক্ষক ছিলেন হুমায়ুন কবীর। তিনি ২০০৩ সালের ব্যাচের আইপিএস। সল্টলেকের এসডিপিও, অবিভক্ত বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার ছিলেন হুমায়ুন কবীর। এছাড়াও এসএসএফ-এর কম্যান্ড্যান্ট। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (সদর), চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার ও কলকাতা পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনারের দায়িত্বও সামলেছেন তিনি।
বিভিন্ন সময় বিতর্কেও নাম জড়িয়েছে হুমায়ুন কবীরের। ২০১৪-তে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার থাকাকালীন তাঁর বিরুদ্ধে কংগ্রেসের হয়ে পক্ষপাতিত্ব করার অভিযোগ তুলেছিলেন, তৃণমূল নেতা আরেক হুমায়ুন কবীর। এরপর হঠাৎই নবান্ন থেকে বদলির নির্দেশ পান মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর।
তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্কের ছবিও ধরা পড়েছে বারবার। গতবছর কলকাতা বইমেলায় হুমায়ুন কবীরের লেখা বই, উত্তরণের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এবার সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের হয়েই কাজ করবেন প্রাক্তন এই আইপিএস অফিসার।