লখনউ: হাথরসের ঘটনার পরে উত্তরপ্রদেশের দ্রুত বদলাচ্ছে রাজনৈতিক ঘটনাক্রম। এই আবহে জাতিগত সংঘর্ষের চক্রান্ত, সরকারের ভাবমূর্তি নষ্টের চেষ্টা এবং অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগে অজ্ঞাত পরিচয় কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে চন্দপা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। ওই সব ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে, চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতেরা নিষিদ্ধ সংগঠন পিএফআইয়ের সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি পুলিশের।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশের মহানির্দেশক (আইনশৃঙ্খলা) প্রশান্ত কুমার জানিয়েছেন, সোমবার গোপন সূত্রে পুলিশ খবর পেয়েছিল, দিল্লি থেকে কিছু সন্দেহভাজন লোক হাথরসের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। টোল প্লাজার কাছে ওই ব্যক্তিদের তল্লাশি করা হয়। সুইফ্ট ডিজায়ার গাড়িতে করে ওই চার জন হাথরসের দিকে যাচ্ছিল। প্রশান্ত কুমার জানিয়েছেন, ওই চার জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের সঙ্গে পিএফআইয়ের এবং পিএফআইয়ের সহযোগী সংগঠন সিএফআইয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকার তথ্য পাওয়া গিয়েছে। ধৃতেরা হল মুজফফরনগরের নাগলার বাসিন্দা সিদ্দিকি, মল্লিকাপুরমের বাসিন্দা সিদ্দিক, বহরাইচ জেলার জারওয়ালের বাসিন্দা মাসুদ আহমদ ও রামপুর জেলার কোতোয়ালি এলাকা আলম। রাজ্য জুড়ে মোট ২১ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অশান্তি ছড়ানোর চক্রান্ত
পুলিশের মহানির্দেশক (আইনশৃঙ্খলা) প্রশান্ত কুমার জানিয়েছেন, হাথরাসের ঘটনা নিয়ে জেলার বিভিন্ন থানায় ছয়টি মামলা দায়ের হয়েছে। এছাড়াও বিজনৌর, সাহারানপুর, বুলান্দশহর, প্রয়াগরাজ, অযোধ্যা, লখনউ কমিশনারেট এলাকায় সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগে ১৩ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। দিল্লি থেকে হাথরাসের দিকে যাওয়া চার সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের অভিযোগ, ধৃতদের উদ্দেশ্য ছিল রাজ্যে অশান্তি ছড়ানো। এ দিকে, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ অভিযোগ করেছেন, রাজ্যে অশান্তি এবং সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ানোর শুধু চেষ্টাই চলছে না, এর জন্য বিদেশ থেকে টাকারও জোগান দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, মোবাইল, ল্যাপটপ এবং শান্তি ব্যবস্থাতে বিরূপ প্রভাব ফেলে এমন সন্দেহজনক লিটারেটারও উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় চন্দপা থানায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে, যাতে দেশের একতা ও অখণ্ডতার হুমকি থেকে শুরু করে (দেশদ্রোহী) বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা বাড়ানো পর্যন্ত গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। রাজ্যে যে কোনও ধরনের অশান্তি রুখতে জোরদার পুলিশি অভিযান শুরু করেছে যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসন। রাজ্য জুড়ে প্রায় ২১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিরোধীদের আশঙ্কা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নামে বিরোধীদের উপরে দমনপীড়ন নামিয়ে আনতে পারে বিজেপি সরকার।
পুলিশের মহানির্দেশক জানিয়েছেন, হাথরসের নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কিছু রাজনৈতিক নেতানেত্রীকে দেখা করতে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার অল্প সময়ের মধ্যেই বিপুল সংখ্যক লোক সেখানে জমায়েত করে। নিয়মভঙ্গের অভিযোগ তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করবে প্রশাসন।