পূর্ব মেদিনীপুর: বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় ছাত্রীর মৃত্যুর পরে, দু’সপ্তাহও কাটল না। ফের দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্যের স্মৃতি ফিরল পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে!
শনিবার সন্ধে ছ’টা নাগাদ টিউশন পড়ে, সাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী। অভিযোগ, রথ সড়কে একটি চলন্ত মালবাহী গাড়ি থেকে কয়েকজন মত্ত যুবক তাঁকে কুপ্রস্তাব দেয়। ছাত্রীর উদ্দেশে কটূক্তিও করা হয়। চালকের পাশের আসনে বসা এক যুবক ছাত্রীর ওড়না টানে বলেও অভিযোগ। টাল সামলাতে না পেরে সাইকেল থেকে পড়ে যান তিনি।
ছাত্রীর চিৎকার শুনে পাশের ক্লাব থেকে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। তাঁদের দেখে, গাড়ি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে অভিযুক্তরা।
কিন্তু ৩০০ মিটার দূরে গিয়ে, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কালীপুজোর জন্য বসানো গেটে ধাক্কা মারে গাড়িটি। দু’জন পালিয়ে গেলেও, হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় অভিযুক্ত গণেশ দাস, তপন বেরা এবং সুরজিৎ দাস। সিআই অফিস থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে এই ঘটনা ঘটার পর ধৃতদের মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় উত্তেজিত জনতা।
ঘটনায়, আক্রান্ত ছাত্রীর পরিবার কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। যদিও প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানকে অভিযোগ হিসেবে গণ্য করে, স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ধৃত গণেশ দাস, তপন বেরা, সুরজিৎ দাসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি, বেপরোয়াভাবে ও বিপজ্জনক গতিতে গাড়ি চালানো-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। রবিবার হলদিয়া আদালতে পেশ করা হলে ধৃত তিনজনের জেল হেফাজত চায় পুলিশ। সেই আবেদন মঞ্জুর করে ধৃতদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠান বিচারক।
গত বিশে অক্টোবর মহিষাদলের একটি ঘটনায় তোলপাড় হয় রাজ্য। সেদিন, নন্দকুমার থেকে ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে মহিষাদলের দিকে টিউশন পড়তে যাচ্ছিল ৩ ছাত্রী। সেসময় একটি গাড়ি তাদের সজোরে ধাক্কা মারে। মৃত্যু হয় মধুমিতা বাগ, নামে এক ছাত্রীর। গুরুতর জখম হয় তার ২ সহপাঠী।
স্থানীয়দের অভিযোগ ছিল, চলাচলের অযোগ্য এই রাস্তা দুষ্কৃতীদের দখলে থাকায়, জাতীয় সড়ক ধরে যেতে হত স্কুল ছাত্রীদের। এবিপি আনন্দে এই খবর সম্প্রচার হতেই, নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। মহিষাদলের মাধবপুর থেকে তাজপুরের স্কুলে যাওয়ার রাস্তা দু’মাসের মধ্যে পাকা করার প্রতিশ্রুতি দেন শুভেন্দু অধিকারী। এই ঘটনায় মৃত ও আহত ছাত্রীরা নন্দকুমার থানা এলাকার মাধবপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এদিনের ঘটনায় যে তিন জন ধরা পড়েছে, তাদের বাড়ি মাধবপুরেই!