কোচবিহার: কোচবিহারের দিনহাটায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে গোব্যাক স্লোগান। একদল লোক জড়ো হয়ে টানা গোব্যাক স্লোগান তোলেন। সঙ্গে 'বিজেপির-রাজ্যপাল' বলেও স্লোগান দেন তারা। যে ঘটনার পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকার পরিস্থিতি। বি৭োভকারী কারা ছিলেন জানা না গেলেও ওই ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ সেই এলাকা থেকে বিক্ষোভকারীদের হঠিয়ে দেয়। রাজ্যপালের সঙ্গে থাকা বিজেপির সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক নেমে পড়েন গাড়ি থেকে। পুলিশের উদ্দেশে্য তাঁকে নির্দেশ দিতেও দেখা যায়, 'সবকটা অ্যান্টিসোশ্যাল, লাঠিচার্জ করুন।' কোচবিহারের সফরের মাঝে এদিন এর আগে জোড়পাটকিতে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পোস্টার পড়েছিল। গোলকগঞ্জে তাঁকে দেখানো হয় কালো পতাকা। 


ঘটনাস্থলে কিছুক্ষণের মধ্যে দিনহাটা থানার আইসি এসে পৌঁছলে তাঁকে ধমকও দেন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের কনভয় কোচবিহারের দিকে যাবে বলে তাঁর কাছে খবর ছিল বলে আইসি জানাতেই রাজ্যপালের চড়া ধমক, 'সব অজুহাত রয়েছে শুধু আইন-শৃঙ্খলা সামলাতে না পারার কোনও অজুহাত নেই।' যারপরই রাজ্যপাল জোড়েন, 'স্থানীয় লোকেদের চোখে পুলিশকে নিয়ে ভয় দেখতে পেয়েছি। তাদের ঘরবাড়ি ভাঙা হয়েছে। মেয়ের বিয়ের জন্য রাখা জিনিসপত্র লুট হয়েছে।'


রাজ্যপালের এদিনের কোচবিহার সফরের আগে থেকেই ক্রমশ চড়ছিল রাজনৈতিক পারদ। গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পত্রযুদ্ধে জড়িয়েছিলেন জগদীপ ধনকড়। রাজ্য-রাজ্যপালের যে সংঘাতের মাঝেই তাঁর কোচবিহার সফর ও গোটা ঘটনাক্রম নিয়ে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের প্রতিক্রিয়া, 'সাংবিধানিক রীতি ভাঙছেন রাজ্যপালই'। ফের রাষ্ট্রপতির কাছে নালিশ জানানোর হুঁশিয়ারিও দেন তিনি। অপর তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেন, 'যোগীর রাজ্যে যখন লাশ গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়, তখন রাজ্যপাল কেন কিছু বলেন না।'



এদিন সকালে হেলিকপ্টারে করে কোচবিহারে পৌঁছেই চড়া সুরে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তিনি গতকালের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে বলেছেন, প্রশাসনিক নির্দেশে রাজ্যপাল সরকারের মুঠোয় চলে আসবে।’ তারপই তিনি জোড়েন, ‘সাংবিধানিক পদকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী?’ তাঁর মতে, এভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।


যারপরই সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে রাজ্যপাল বলেন,‘বাংলা ছাড়াও ৪ রাজ্যে নির্বাচন হয়েছে, কোথাও রক্তপাত হয়নি। প্রচারে মুখ্যমন্ত্রীর উস্কানিমূলক মন্তব্যের জেরেই হিংসা হয়েছে রাজ্যে।’