মোহন দাস, খানাকুল : বানভাসি দুর্গতদের ত্রাণসামগ্রী দিতে গিয়ে এলাকার মানুষের কাছে ব্যাপক ক্ষোভের মুখে পড়লেন খানাকুলের বিজেপির বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ।ত্রাণ দিতে যাওয়ার সময়ে তাঁকে হেনস্থাও করা হয়েছে বলে অভিযোগ। তাঁর সমস্ত মালপত্র লুঠ করে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে এলাকার লোকজনের বিরুদ্ধে। বিধায়কের নিরাপত্তরক্ষীকেও ধাক্কাধাক্কি  করা হয় বলে অভিযোগ। সবমিলিয়ে চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। ঘটনা খানাকুলের হরিশচক গ্রামের।বিধায়ক খানাকুল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে।যদিও তৃণমূলের পক্ষ থেকে ঘটনার কথা অস্বীকার করা হয়েছে।


মঙ্গলবার বিকালের পরে বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ নৌকা করে ত্রাণ সামগ্রী ও শুকনো কিছু খাবার দাবার নিয়ে এই এলাকায় হাজির হন। তখনই হামলাকারীরা তাঁদের ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে বলে অভিযোগ । এমনকি, অভিযোগ তাকে হেনস্থাও করা হয় ৷ 


যদিও তৃণমূলের পক্ষ থেকে এখানকার পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তথা খানাকুল ২নং ব্লকের যুব সভাপতি নূরনবী মন্ডল বলেন, বিজেপি কাউকে ত্রান না দিয়ে বিধায়কের তহবিলের  টাকায় ত্রান কিনে দলীয় কার্যালয়ে মজুত করছিল। সেই জন্য সাধারণ মানুষ ক্ষোভ দেখিয়েছে। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোন সম্পর্ক নেই।


এদিকে, হুগলির খানাকুলের পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক। জলের তলায় প্রায় ৬৫টি গ্রাম। নতুন করে জল বাড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন গ্রামবাসীরা। উঠেছে ত্রাণ না মেলার অভিযোগ। তবে প্রশাসনের দাবি, দুর্গতদের সবরকম সাহায্যই করা হচ্ছে। আজ এলাকা পরিদর্শন করেন শ্রমমন্ত্রী।


যেদিকে চোখ যায়, সেদিকে শুধুই জল আর জল।চাষের জমি, রাস্তাঘাট, দোকানপাট থেকে বাড়ি ঘর---সবই জলমগ্ন।চারদিন ধরে অসহনীয় অবস্থা।বিদ্যুৎহীন এলাকা। ফলে চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন বানভাসী মানুষ।জলের তলায় হুগলির খানাকুলের প্রায় ৬৫টি গ্রাম।পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ার বদলে, নতুন করে জল ঢুকেছে আরও বেশ কিছু গ্রামে।আরামবাগ-গড়েরঘাট রাস্তার আরও বেশকিছু জায়গা জলের তলায় চলে যাওয়ায় খানাকুল যেতে সমস্যা দেখা দিয়েছে।চারিদিকে জল থইথই। অথচ নেই পানীয় জল। কোনও কোনও এলাকায় সম্পূর্ণ ডুবে গিয়েছে একতলা বাড়ি।ফলে ছাদ হারিয়ে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন রাস্তায়। ত্রিপল খাঁটিয়ে চলছে বসবাস।প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়া অনেকেই আবার ত্রাণ না মেলার অভিযোগ করেছেন। যদিও প্রশাসনের তরফে পাল্টা দাবি করা হয়েছে, সবাইকেই সাহায্য করা হচ্ছে।এদিন খানাকুলের রাজহাটি এলাকা পরিদর্শন করেন শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না। বানভাসীদের হাতে তুলে দেন ত্রাণসামগ্রী।এদিকে, আরুন্দা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বিভিন্ন গ্রামে আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধার করে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যায় স্থানীয় পঞ্চায়েত।


হুগলি জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর,দুর্গত এলাকায় ৮০টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। সেখানে কয়েক হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।