সোমনাথ মিত্র, চন্দননগর: প্রবল বর্ষায় এখনও জলমগ্ন বিভিন্ন জেলার একাধিক এলাকা। এরই মধ্যে ডাকাতিয়া খালের জল উপচে ভেসে গেল হুগলির হরিপাল ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। প্লাবিত বিস্তীর্ণ কৃষিজমি। 


হুগলির হরিপালে সহদেব গ্রাম পঞ্চায়েত, দ্বারহাটা পঞ্চায়েত, কৈকালা পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকার একাধিক কৃষিজমি এখনও জলমগ্ন রয়েছে। 


স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, এলাকার বেশ কয়েক হাজার বিঘা জমিই জলের তলায়। ধান ও ধানের বীজসহ একাধিক সবজি ক্ষেতও ডুবেছে জলের তলায়। ফলে স্বভাবতই মাথায় হাত স্থানীয় কৃষকদের। 


এই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চাষিদের এখন একটাই চিন্তা, আদৌ তাঁরা এই মরশুমে আমন ধান আর রোপন করতে পারবে কিনা। কারণ অবশ্যই এখনও মাঠে প্রচুর পরিমাণে জল জমে রয়েছে। বর্ষার নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলে আর ধান চাষ করা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় চাষীরা।


মাত্র মাস তিনেক আগেই চাষীরা সম্মুখীন হয়েছিলেন ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের। তার প্রভাবে তিল, বাদাম, সবজির প্রবল ক্ষতি হয়েছিল। সেই ধাক্কা পুরোপুরি সামলে ওঠার আগেই ফের নতুন করে ক্ষতির মুখে পড়ে এক কথায় দিশেহারা এই সমস্ত কৃষকেরা। সকলেই আপাতত সরকারি সাহায্যের আশায় দিন গুনছেন।


অন্যদিকে কেবল চাষের জমিই বিপর্যস্ত নয়। জলমগ্ন স্থানীয়দের ঘরবাড়িও। হরিপাল ছাড়াও তারকেশ্বর, জাঙ্গিপাড়া, খানাকুল, গোঘাট, আরামবাগের বিস্তৃর্ণ এলাকাও জলমগ্ন। 


চাষের জমি ও বেশ কয়েক হাজার বাড়িতে জল ঢুকেছে। জেলার বহু মানুষ আপাতত একেবারে গৃহবন্দি। খানাকুলে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করতে নামানো হয়েছে সেনা। 


জেলার কৃষি দফতরের আধিকারিকরা বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করছেন। খতিয়ে দেখছেন ক্ষয়ক্ষতি। হুগলি জেলা কৃষি আধিকারিক জয়ন্ত পাঁড়ুই জানিয়েছেন, হুগলি জেলার চাষ করা প্রায় ২৮ হাজার হেক্টর জমি ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁর মতে, এর পরিমাণ আরও বাড়বে। যে পরিমাণ ধান গাছ ও ধান বীজের ক্ষতি হয়েছে তাতে নতুন করে ধান চাষ করা যাবে কি না সেই বিষয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেছেন তিনি।