সুনীত হালদার, হাওড়া: জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এক কিশোরীর প্রাণ বাঁচালেন হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। ওই শরীরের ভিতরে তিনটি জায়গায় আটকে থাকা সূচ বের করা হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে। এর মধ্যে একটি সূচ আটকে ছিল কিডনিতে। বাকি দু’টি গলার নলি ও স্পাইনাল কর্ডে। গত শুক্রবার অস্ত্রোপচারের পর ওই কিশোরীর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।
মাসখানেক আগে শিবপুর পি এম বস্তির বাসিন্দা রোশনি খাতুন নামে ওই কিশোরী খাবারের সঙ্গে পাঁচটি সূচ গিলে ফেলে। অস্বস্তি হওয়ায় বমি করলে বেরিয়ে আসে দু’টি সূচ। বাকি সূচগুলি যে শরীরের মধ্যে রয়েছে তা বুঝতে পারেনি ওই কিশোরী। গত সপ্তাহ থেকে রক্ত বমি করতে থাকে সে। সঙ্গে পেটে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়। সঙ্গে গলা ব্যথা এবং পিঠে প্রচন্ড যন্ত্রণা শুরু হয়। বাড়ির লোকেরা শিবপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসক সিরাজ আহমেদকে দেখান। কেস হিস্ট্রি জানার সময় সূচ গিলে ফেলার কথা জানতে পারেন চিকিৎসক।
রোশনি জানায়, এক পরিচিতের বাড়িতে খাবার খেয়ে এই বিপত্তি ঘটে। সে জানত না খাবারে সূচ ছিল। এক্সরে করে এবং এন্ডোস্কোপি করে দেখা যায়, তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় সূচগুলি বিপজ্জনকভাবে আটকে রয়েছে। এরপরই চিকিৎসক সিরাজ আহমেদের নেতৃত্বে চারজন চিকিৎসকের একটি দল তৈরি করা হয়। শুক্রবার জটিল অস্ত্রোপচার করে সূচ বের করতে সফল হন তাঁরা।
চিকিৎসক সিরাজ আহমেদ জানিয়েছেন, ‘কিডনিতে আটকে থাকা সূচটি বের করতে প্রচণ্ড ঝুঁকি নিতে হয়। এটা সফল না হলে সংক্রমণ বেড়ে গিয়ে আরও জটিল আকার নিত।’
পেশায় সব্জি বিক্রেতা রোশনির বাবা আফতাব আলি বলেছেন, কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁর মেয়ের খাবারের সঙ্গে সূচ মিশিয়ে দিয়েছিল কি না, এটা জানতে তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হবেন। তবে রোশনি নতুন করে জীবন ফিরে পাওয়ায় খুশি তিনি। চিকিৎসকদের অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন রোশনির বাবা।