কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: দামোদর। বিধ্বংসী বন্যার জন্য একসময় এই নদের নাম ছিল দুঃখের নদী। তুলনা টানা হত চিনের হোয়াং হোর সঙ্গে। এখন দামোদরের সেই বিধ্বংসী চেহারা আর না থাকলেও, ফি বছর বর্ষায় এখনও এভাবেই চাষের জমি গিলে খায় দামোদর। অভিযোগ, নদীখাত থেকে অবৈধভাবে তুলে নেওয়া হচ্ছে বালি। আর তার জেরেই ভয়ঙ্কর ভাঙনের কবলে বর্ধমান শহরের দিকে দামোদরের তীরবর্তী এলাকা। দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে জেলা প্রশাসন।


বসতবাড়ি থেকে রাস্তা, দামোদরের পাড়ের অনেককিছুই চলে গেছে জলের তলায়। পাড় বাঁধানোর কাজ শুরু হলেও, তাতেও রক্ষা পাওয়া যায়নি। এমনই ছবি পূর্ব বর্ধমানের ১ নম্বর ব্লকের। দামোদরের উত্তর পাড় অর্থাত্‍ বর্ধমান শহরের দিকে চরমানা, বহরপুর, গৈতানপুর, বেলকাশ-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় এই ভাঙনের ফলেই আজ বিঘার পর বিঘা এক ফসলি, দো ফসলি এমনকি তিন ফসলি জমিও তলিয়ে গিয়েছে। 


কিন্তু কেন এভাবে ভাঙছে দামোদরের পাড়?  স্থানীয়দের অভিযোগ, এর নেপথ্যে রয়েছে দামোদর থেকে অবৈধভাবে বালি তুলে নেওয়া। সম্প্রতি দামোদরের এই অংশে পাড় বাঁধানোর কাজ শুরু করেছিল জেলা প্রশাসন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে বর্ষা আসতে ফের শুরু হয়েছে ভাঙন। বর্ধমানের জনৈক এক চাষি বলছিলেন, 'বিঘের পর বিঘে চলে যাচ্ছে। আমারই ১৭ বিঘা চলে গেছে। বালি তোলার জন্য অসব হচ্ছে। আমরা বলতে পারি না।' অপর এক চাষির অভিযোগ, 'পার বাধাই হলে সমস্যার সমাধান হবে।'


কিন্তু এভাবে আর কতদিন? আর কত জমি তলিয়ে গেলে টনক নড়বে প্রশাসনের? পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধারা বলেছেন, 'অবৈধ বালি উত্তোলন বরদাস্ত করা হবে না। পার ভাঙার কথা শুনেছি। বৈঠক করে খতিয়ে দেখতে বলেছি। কাজ কেন বন্ধ হল, দেখব। সমস্যার সমাধান হবে।'


কবে সমস্যার সমাধান হবে, চাতক পাখির মতো সেদিকেই তাকিয়ে ভাঙনের কবলে পড়া মানুষগুলো।