কলকাতা: ‘জে পি নাড্ডার ওপর হামলার তীব্র নিন্দা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।
ট্যুইটে অমিত শাহ বলেন, ‘জে পি নাড্ডার ওপর হামলা নিন্দনীয়। এই হামলার কোনও নিন্দাই যথেষ্ট নয়। কেন্দ্র এই হামলাকে গুরুত্ব দিয়ে বিচার করছে। এই পরিকল্পনামাফিক হামলার জবাব দিতে হবে। বাংলার সরকারকে জবাব দিতে হবে জনগণের কাছে।
এখানেই থামেননি তিনি। আরও বলেন, ‘তৃণমূল শাসনে বাংলা অত্যাচার, অরাজকতা, অন্ধকার যুগে। তৃণমূল সরকারের আমলে রাজনৈতিক হিংসা চরম সীমায়। গণতন্ত্রে যাঁরা বিশ্বাস করেন তাঁদের কাছে এটা দুঃখের-চিন্তার।’
অন্যদিকে, জে পি নাড্ডার সঙ্গে কথা হয় রাজনাথ সিংহের। ডায়মনডহারবরে নাড্ডার কনভয়ে হামলার পর বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির সঙ্গে কথা হয় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর। ট্যুইটে রাজনাথ লেখেন, ‘হামলার ঘটনার তদন্ত হওয় উচিত।’
নাড্ডার কনভয়ে হামালা। অভিযোগ জানাতে রাজভবনে লকেট চট্টোপাধ্যায়, অর্জুন সিংহর নেতৃত্বে বিজেপির প্রতিনিধি দল। সেই বৈঠক থেকে বেরিয়ে বিজেপি মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ পাকিস্তানের পর্যায়ে চলে গেছে। ডায়মন্ডহারবারের ঘটনা ন্যক্কারজনক।’
তাঁর প্রশ্ন, ডায়মন্ডহারবার কী শুধু ভাইপোর, ভবানীপুর শুধু পিসি-র? যে বিধায়ক, যে গুন্ডা এই কাজ করেছে, তার উপযুক্ত শাস্তি চাই।’ তিনি জানান, ‘কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে হামলার ঘটনা জানানো হয়েছে। তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘দল থেকে নির্দেশ দিলে, অভিষেককে কালীঘাট থেকে বেরোতে দেব না।’
বিজেপি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পর ট্যুইট করেন রাজ্যপাল। লেখেন, ‘বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির কনভয়ে হামলায় অনেকে আহত, গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। উদ্বেগপ্রকাশের পরেও এই সবকিছু ঘটেছে। বিস্তারিত জানাতে নির্দেশ দিয়েছি মুখ্যসচিব, ডিজিপিকে।’ যদিও, সাতটা নাগাদ আরেকটি ট্যুইটে তিনি জানান, কেউ বিস্তারিত কিছুই জানাননি। তাঁদের ক্রমাগত উদাসীন সাড়া না দেওয়ার মানসিকতা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, রাজ্যের সাংবিধানিক কাঠামো ভেঙে পড়ছে।
বৃহস্পতিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ডহারবারে ছিল বিজেপির সভাপতি জেপি নাড্ডার কর্মিসভা। হাইভোল্টেজ এই সভা ঘিরে উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে উঠেছিল আগেই। কিন্তু সেই সভায় পৌঁছনোর পথেই নজিরবিহীন ঘটনা ঘটল।
শিরাকোল মোড়ের কাছে প্রথম হামলা হয় নাড্ডার কনভয়ে। গাড়ি লক্ষ্য করে উড়ে আসে লাঠি, পতাকা লাগানোর ডান্ডা। নাড্ডার গাড়ির পিছনের গাড়িগুলির ওপরে শুরু হয় ইটবৃষ্টি।
বিজেপি সভাপতির নিরাপত্তায় থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা কোনওক্রমে তাঁর গাড়িকে সেখান থেকে বের করে আনেন। কনভয়ে নাড্ডার গাড়ির পিছনেই ছিল দিলীপ ঘোষের গাড়ি। তাঁর গাড়ির কাচও ভাঙা অবস্থায় দেখা যায়।
শিরাকোল মোড় থেকে কিছুটা এগোনোর পর দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে ফলতা মোড়ের কাছে। কনভয়ের একের পর এক গাড়ি লক্ষ্য করে উড়ে আসে ইট-পাথর। কনভয়ে সামনের দিকেই ছিল পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীর গাড়ি। ইটের আঘাতে হাতে চোট পান তিনি।
অভিযোগ, মুকুল রায়, অনুপম হাজরা, রাহুল সিনহা সহ একাধিক বিজেপি নেতার গাড়ি লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি হয়। এই অবস্থার মধ্য দিয়েই শেষপর্যন্ত সভাস্থলে পৌঁছয় জেপি নাড্ডার বিশাল কনভয়।