আবীর দত্ত ও করুণাময় সিংহ, মালদা: কালিয়াচক হত্যাকাণ্ডে ধৃতকে জেরা করে চাঞ্চল্যকর তথ্য এল পুলিশের হাতে।
পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় ধৃত মূল অভিযুক্ত আসিফ মহম্মদ জানিয়েছে, মা-বাবা-বোন-ঠাকুমার সঙ্গে দাদাকেও সে খুনের ছক কষেছিল। খুনের আগের দিন যাবতীয় সরঞ্জাম কিনেছিল নিজেই।
পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় আসিফ জানিয়েছে, ৫ জনকেই পানীয়র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়েছিল সে। পর বেহুঁশ হয়ে পড়লে মুখে লাগানো হয়েছিল লিউকোপ্লাস্ট। কিন্তু, জ্ঞান ফিরে আসতেই সেখান থেকে পালিয়ে বাঁচেন আসিফের দাদা।
পুলিশ সূত্রে দাবি, ধৃতের দাদা জানিয়েছেন, পুলিশ জানিয়েছে, ২৮ ফেব্রুয়ারি মা-বাবা, বোন, ঠাকুমাকে এবং তাঁকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচৈতন্য করে আসিফ। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে চারজনকে গুদামের চৌবাচ্চায় চোবায় সে।
মৃত্যু নিশ্চিত হলে মৃতদেহগুলি মাটি খুঁড়ে পুতে দেয় এই তরুণ। অচৈতন্য না হওয়ায়, বিষয়টি দেখতে পেয়ে যান দাদা। এমনকি ভাইয়ের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয় তাঁর। এরপর কোনওরকমে পালিয়ে যান বলে পুলিশকে জানিয়েছেন ধৃতের দাদা।
পুলিশের দাবি, জেরায় অপরাধ কবুল করেছে আসিফ মহম্মদ। পরিকল্পনামাফিক খুনের ছক করা হয়েছিল বলে নিশ্চিত পুলিশ।
এদিকে, কালিয়াচকে একই পরিবারের চারজনকে খুনের ঘটনায় আরও ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতরা ওই পরিবারের ছোট ছেলে আসিফ মহম্মদের বন্ধু সাবির আলি ও মহম্মদ মাফুজ। ধৃতদের বাড়ি থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্র ও কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে।
গতকাল, কালিয়াচকের পুরাতন ১৬ মাইল এলাকায় থাকতেন গৃহকর্তা, তাঁর স্ত্রী, মা এবং তিন ছেলে-মেয়ে থাকতেন। এদিন সেই বাড়ির পাশের গুদামে মাটির তলা থেকে উদ্ধার হয়-- ৫৩ বছরের জাওয়াদ আলি, তাঁর স্ত্রী ইরা বিবি, মেয়ে আরিফা খাতুন (১৫) এবং গৃহকর্তার মা ৭২ বছরের আলেকজান বিবি-র মৃতদেহ।
পুলিশ সূত্রে খবর, চারমাস ধরে বাড়িতে একাই থাকত খুনে অভিযুক্ত আসিফ মহম্মদ। বাইরের কারও সঙ্গে মিশত না। অনলাইনে অর্ডার দিয়ে আনাত খাবার। প্রতিবেশীদের জানিয়েছিল, কিছুদিন জন্য পরিবারের সদস্যরা বাইরে গিয়েছেন। সন্দেহ এড়াতে বাড়িতে পরিচারিকাকেও ঢুকতে দেয়নি অভিযুক্ত।