অতনু হালদার, হাওড়া : তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফেরার পর, প্রথমবার ঝাড়গ্রাম সফরে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন হাওড়ার ডুমুরজলা স্টেডিয়াম থেকে কপ্টারে রওনা দেন তিনি। যাওয়ার সময় আকাশপথে পরিদর্শন করেন হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের প্লাবিত এলাকা। গত সপ্তাহে হাওড়ার আমতায় বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু অতিরিক্ত জল জমায় আমতার পর আর এগোতে পারেনি মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি। তাই আজ ঝাড়গ্রাম যাওয়ার পথেই আকাশপথে উদয়নারায়ণপুরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তিনি।
ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, তিনি ফের একবার ডিভিসের জল ছাড়া নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি ইতিমধ্যেই আর্জি জানিয়েছেন যাতে পরবর্তীতে এলাকা ভিত্তিক ভাবে ভাবনাচিন্তা করে তারপর জল ছাড়া হয়। নইলে মানুষের দুর্গতির সীমা থাকে না।
গত বুধবার আমতা যাওয়ার পথে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে ‘ম্যান মেড বন্যা’র অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেন,প্রত্যেক বছর একমরম করে বন্যা করাচ্ছে। এটা বর্ষা বেশি হচ্ছে বলে নয়, এটা ম্যান মেড বন্যা। আগেও, সাত-আটটা চিঠি দিয়েছি। কোনও সুরাহা হয়নি। এরপরই DVC নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতেও, সেই ম্যান মেড বন্যার অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন।
ডিভিসির পাঞ্চেত, মাইথন এবং তেনুঘাট জলাধার থেকে প্রায় ২ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ার ফলে হুগলি, হাওড়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম ও এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায় চলে গেছে।...পশ্চিমবঙ্গ নদীমাতৃক রাজ্য। DVC-র জলাধার থেকে প্রচুর জল ছাড়ায় প্রতিবছরই ম্যান মেড বন্যা হয়। ২০১৫-র পর, ২০১৭, ২০১৯ ও ২০২১ সালে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় রাজ্যকে।
গত সপ্তাহের বৃষ্টিতে বানভাসি অবস্থা হয় উদয়নারায়ণপুর-আমতা-খানাকুলে। কোথাও ছাদ ছুঁইছুঁই জল, কোথাও ছাদে আশ্রয় অসহায় মানুষের। গত বুধবার সড়কপথে আমতার দুর্গত এলাকা ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। ত্রাণ ও পুনর্বাসন যাতে সুষ্ঠুভাবে হয়, সে জন্য নির্দেশ দেন প্রশাসনিক আধিকারিকদের।
আজ, সোমবার ঝাড়গ্রামে পৌঁছে বিশ্ব আদিবাসী উত্সবে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের সঙ্গে নাচের তালে পা মেলান তিনি। বাজান ধামসাও। বীরসামুণ্ডার ছবিতে মাল্যদান করেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ রাত্রে তিনি থাকবেন ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ির ট্যুরিস্ট কমপ্লেক্সে। মঙ্গলবার ঘাটালে প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী।