কলকাতা: শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পর সব রাজনৈতিক দলকে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী। প্রতিহিংসাপরায়ণ না হতে আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর। বললেন, “আমি সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে অনুরোধ করছি রাজ্যে শান্তি বজায় রাখার জন্য। বাংলার মানুষ হিংসা ভালোবাসে না।“


একইসঙ্গে তিনি জানিয়ে রাখলেন, হিংসা ছড়ালে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মুখ্য়মন্ত্রীর মতে, বাংলা কঠিন সময়ের ভিতর দিয়ে যাচ্ছে। রাজ্যপাল বলেন,  মুখ্যমন্ত্রীর ওপর আস্থা রাখছি।


করোনা মোকাবিলা যে তাঁর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, তা এদিন দায়িত্বভার গ্রহণ করার পরই স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে আজ একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা এখন আমাদের প্রথম কাজ।”


তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর পদে শপথ নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে শপথবাক্য় পাঠ করালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। 


এই উপলক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ট্যুইট করে অভিনন্দন জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী লেখেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথগ্রহণের জন্য মমতা দিদিকে অভিনন্দন। 


করোনা আবহে অনাড়ম্বর তৃতীয়বারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। একাই শপথ নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হতে চলেছে অনাড়ম্বর ও সংক্ষিপ্ত। 


মুখ্যমন্ত্রীর শপথগ্রহণে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রশান্ত কিশোর। এছাড়াও ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সী, ফিরহাদ হাকিম, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিনেতা দেব। 


আমন্ত্রিতদের তালিকাও যথেষ্ট সংক্ষিপ্ত। বুধবারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়,  রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকে।


আমন্ত্রিতদের তালিকায় ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং বিধানসভার সদ্য প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। 


আমন্ত্রণ করা হয়েছিল রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও বিজেপি পরিষদীয় দলের প্রাক্তন নেতা মনোজ টিগ্গাকে।


তবে, মুখ্য়মন্ত্রীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যাবেন না বলে এদিনই জানিয়ে দেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ভোটের পর আমাদের কর্মীদের উপর আক্রমণ হচ্ছে। সেই কারণেই শপথ অনুষ্ঠানে যাব না। যোগ দেননি বিমান বসুও।


এছাড়াও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দালকে। 


মুখ্যমন্ত্রীর শপথগ্রহণের পর রাজভবনে একটি চা-চক্রের আয়োজন করা হয়েছিল। তা সেরে সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ নবান্নে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তাঁকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। 


তৃণমূল সূত্রে খবর, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেলে ২১ জুলাই ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে বিজয় উত্‍সব পালন করা হবে। সেখানে দেশের বিজেপি বিরোধী সব দলের নেতৃত্বকে আমন্ত্রণ করার পরিকল্পনা রয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের।