কলকাতা: করোনা ভ্যাকসিনের অভাব নিয়ে ফের কেন্দ্রকে নিশানা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি বলেছেন, ‘রাজ্যে আড়াই কোটি মানুষকে করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের প্রয়োজন ১৪ কোটি ভ্যাকসিন। কেন্দ্র অনেক টাকা তুলেছে, কিন্তু ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না। ১৪ কোটির বদলে মাত্র ২ কোটি ১২ লক্ষ ভ্যাকসিন পাওয়া গিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী কার্যত রাজ্যকে বঞ্চনার অভিযোগও তুলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘অনেক রাজ্যকে বেশি ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে, অনেককে দেওয়া হচ্ছে না। উত্তরপ্রদেশ বিজেপি রাজ্য বলে বেশি দেবেন, বাংলাকে দেবেন না, এটা অন্যায়। ভ্যাকসিন না পেলে কীভাবে সবাইকে ভ্যাকসিন দেব?’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘এমাসেও ৭৫ লক্ষ দেওয়ার কথা বলে মাত্র ২৫ লক্ষ পেয়েছি। এব্যাপারে আমরা আবার কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দিয়েছি। ভ্যাকসিন না আসায় ৭দিন ভ্যাকসিন দেওয়া বন্ধ ছিল।’
তিনি জানিয়েছেন, ‘আজকেও প্রধানমন্ত্রীকে ভ্যাকসিন নিয়ে ফের চিঠি দিয়েছি। হয়তো কোনও উত্তর পাব না, তাও চিঠি দিয়েছি। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে, দিল্লি গিয়ে নেতাদের সঙ্গে দেখা করব। সময় পেলে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করতে পারি।’
তিনি বলেছেন, ‘ মানুষ ডেডবডি হয়ে গেলে ভ্যাকসিনেসনের সার্টিফিকেট কি মানুষ টাঙিয়ে রাখবে!’
সামনেই উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন।যোগীর অগ্নিপরীক্ষা।ক্ষমতা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ। তার ঠিক আগে বৃহস্পতিবার বারাণসীতে দাঁড়িয়ে, করোনা মোকাবিলায় যোগী আদিত্যনাথের ভূয়সী প্রশংসা করলেন নরেন্দ্র মোদি। যা নিয়ে পাল্টা কটাক্ষ ছুঁড়ে দিতে দেরি করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, এটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব। প্রধানমন্ত্রী যাই বলুন না কেন টিকাকরণের দিক থেকে এগিয়ে বাংলা। উত্তরপ্রদেশকে সবচেয়ে বেশি টিকা দেওয়া হচ্ছে। সে পাক। সকলের টিকার অধিকার আছে। কিন্তু বিজেপিশাসিত রাজ্য বলে বেশি টিকা পাবে। সেটা ঠিক নয়।
কেন্দ্রের কোউইন পোর্টালের বৃহস্পতিবারের তথ্য বলছে,উত্তরপ্রদেশে করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে ৩ কোটি ৩১ লক্ষ জনকে।পশ্চিমবঙ্গে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ১ কোটি ৮২ লক্ষ জন।উত্তরপ্রদেশে করোনার দুটি ডোজ পেয়েছেন এমন বাসিন্দার সংখ্যা ৬৩ লক্ষ। সেখানে বাংলায় ৭০ লক্ষেরও বেশি মানুষ করোনা ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ পেয়েছেন।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে উত্তরপ্রদেশের গঙ্গায় দেহ ভাসা কিংবা গঙ্গা পারে সার দিয়ে পোঁতা মৃতদেহের ছবি সামনে আসার পর দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে! এই পরিস্থিতিতেই যোগী সরকারকে দরাজ সার্টিফিকেট দিলেন নরেন্দ্র মোদি। যা নিয়ে কটাক্ষের সুরে এই ট্যুইট করে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন লিখেছেন....“১৫ জুলাইকে সহজে ১ এপ্রিল পরিণত করতে পারেন উনি।”