কলকাতা: হিন্দু ধর্মের নামে অন্য একটা ঘৃন্য ধর্মকে চালানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্রের শাসক দল ও তাদের সহযোগীরা। এই অভিযোগ তুলে বিজেপি ও তার তাত্ত্বিক সংগঠন আরএসএস-কে তীব্র আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম না করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তুলনা টানলেন হিটলার-মুসোলিনির সঙ্গে।


এদিন মেয়ো রোডে গাঁধী মূর্তির পাদদেশর সভাস্থল থেকে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘আরএসএস হিন্দু ধর্মের প্রবর্তক নয়। স্বামী বিবেকানন্দকে আমরা হিন্দু ধর্মের প্রবর্তক মনে করি। ওরা একটা ঘৃন্য ধর্মকে হিন্দু ধর্ম বলে চালানোর চেষ্টা করছে। যার সঙ্গে আপনার-আমার কোনও সম্পর্ক নেই। হিটলার-মুসোলিনি এভাবেই কাজ করত।’


কেন্দ্রীয় সরকারকে উদ্ধত বলে কটাক্ষ করে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন তৃণমূলনেত্রী। বলেন, ‘মোদি সরকার গণতন্ত্র, সংবিধান মানছে না। রাজীব গাঁধী ৪০০ সাংসদ নিয়েও ঔদ্ধত্য দেখাননি। ৩০০ সাংসদ নিয়ে মোদি যা ইচ্ছে তাই করছেন।’


তৃণমূলনেত্রীর দাবি, কৃষি আন্দোলন থেকে চোখ ঘোরাতে জাতীয়তাবাদী তাস খেলছে বিজেপি। বলেন, ‘কখনও পাকিস্তান, কখনও চিনের নাম করছে। কৃষি আন্দোলন থেকে চোখ ঘোরাতে জাতীয়তাবাদী তাস খেলছে বিজেপি।’


এদিন নতুন সংসদ ভবনের শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই নিয়েও আক্রমণের সুর চড়ান মমতা। বলেন, ‘হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়ে নতুন সংসদ ভবন বানাচ্ছেন। ওই টাকা কৃষকদের দেওয়া উচিত ছিল।’


একইসঙ্গে আক্রমণ করেন বিজেপিকেও। মমতা বলেন, ‘বিজেপি বাংলার রাজনৈতিক দল নয়। বিজেপি দিল্লি এবং গুজরাটের দল। গ্রামে বাইরের কাউকে দেখলেই থানায় জানান।’


কৃষি আন্দোলনের মঞ্চ থেকে কেন্দ্রের কৃষক-বিরোধী নীতি ইস্যুতে গর্জে ওঠেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়ে দেন, কৃষকদের আন্দোলনের পাশে তৃণমূল কংগ্রেস থাকবে। তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রতিবাদে সর্বস্তরের মানুষের একজোট হওয়া প্রয়োজন।


এই প্রেক্ষিতে সিঙ্গুর আন্দোলনের সময়কার তাঁর অনশনের কথা মনে করিয়ে মমতা বলেন, ‘কৃষক-স্বার্থে ২৬ দিন অনশন করেছিলাম ধর্মতলার মোড়ে। প্রতিজ্ঞা ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণ করতে দেব না। মৃত্যু-মুখে দাঁড়িয়ে লড়াই চালিয়ে গেছি।’


তিনি জানিয়ে দেন, ‘কৃষকদের আন্দোলনের পাশে তৃণমূল কংগ্রেস থাকবে। বলেন, ‘কেন্দ্রের ৩টি আইনই কৃষক বিরোধী। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য আইনে পরিবর্তনের কারণেই দামবৃদ্ধি। আগে রাজ্য সরকার আগু-পেঁয়াজ কিনে মজুত করত। সঙ্কটের সময় কমদামে বিক্রি করত। গরমকালে বাজারে আলুর সঙ্কট দেখা দেবে।’


তৃণমূলনেত্রী মনে করিয়ে দিলেন, কেন্দ্রের কৃষক-বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চলবে। বলেন, ‘বিজেপি চায় দেশে তারা একা থাকবে, আর কেউ থাকবে না। মজুতে ঊর্ধ্বসীমা তুলে দিয়ে মজুতদারদের সুবিধা করে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের এই নীতির বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন চলবে।’