কলকাতা:দিল্লির বিধানসভা ভোটে বিজেপির বিভাজনের কৌশল মুখ থুবড়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে

দিল্লিতে আম আদমি পার্টির মতো আঞ্চলিক দলের কাছে বিজেপির পরাজয় কি বাংলায় তৃণমূলকে অক্সিজেন যোগাবে? না কি দিল্লির হারকে পেছনে ফেলে, লোকসভা ভোটের মতোই ২০২১-এর বিধানসভা ভোটেও চমক দেবে বিজেপি?

এই প্রেক্ষাপটে শুক্রবার বিধানসভায়, দিল্লির নাম না করে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপালের বক্তৃতার জবাবি ভাষণ দেওয়ার সময় বিজেপির পরিষদীয় দলনেতা মনোজ টিগ্গার উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আপনার পার্টিকে বোঝান, এটা বাংলা। বিহার উত্তরপ্রদেশ নয়। বাংলা শিক্ষাং, সংস্কৃতি, মানবিকতার পীঠস্থান। বাংলা মুখ বুজে সব কিছু মেনে নেবে না। গায়ের জোরে দেশ চলে না। আপনারা ঘৃণার রাজনীতি আমদানি করছেন'।

দিল্লির ভোটপ্রচারে বিজেপির নেতা-মন্ত্রী-সাংসদদের মুখে বারবার শোনা গিয়েছে হুমকি-হুঁশিয়ারি। যদিও, ভোটের ফল প্রকাশের পর অমিত শাহ স্বীকার করে নিয়েছেন দিল্লির ভোটের আগে গুলি চালানো বা ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের মতো মন্তব্য করা উচিত হয়নি। এনিয়েও খোঁচা দিতে ছাড়েননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বিধানসভায় তিনি বলেন, 'নেতারা যদি গুলি চালানোর কথা বলেন, তাহলে কর্মীরা কী করবে! গুলি চালানোর পর, তা নিয়ে বলে আর লাভ কী! এগুলো সামলান। না হলে নিজেরা নিজেদের সামলাতে পারবে না। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না'।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়েও এদিন ফের সুর চড়ান মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গার উদ্দেশে তিনি বলেন, 'কে আপনার পার্টিকে কাগজ চাওয়ার অনুমতি দিয়েছে? এখানে সিএএ-এনআরসি নিয়ে কিছু করতে দেব না আমরা। সিএএ-এপিআর-এনআরসি প্রত্যাহার করুন'।


এরপর অন্যান্য রাজ্যের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী আহ্বান জানান, 'দয়া করে এনপিআর করবেন না। এপিআর আদতে এনআরসি-র প্রথম ধাপ। প্রয়োজনে আমরা এনিয়ে চিঠিও দেব'।

পাল্টা মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ ছুড়ে দিতে দেরি করেনি বিজেপি।  দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, 'এনআরসি, এনপিআর নিয়ে বিরোধীদের ডেকেছিলেন। বিরোধীরা বুঝেছে আপনার সঙ্গে থেকে লাভ নেই। তাই আপনাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে'।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এরাজ্যে সিএএ-র বিরুদ্ধে সরব হলেও, দিল্লিতে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী যখন এই ইস্যুতে রণকৌশল ঠিক করতে বিরোধী দলগুলিকে নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন, তখন সেখানে অংশ নেয়নি তৃণমূল।এই প্রেক্ষাপটে তাঁর অবস্থান নিয়ে খোঁচা দিয়েছে বামেরা।

বামফ্রন্টের পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন,গোটা দেশজুড়ে সবাই বিরোধিতা করছে একসঙ্গে। শুধু তৃণমূল নেই। এই আন্দোলনে থাকা ওনার পক্ষে সম্ভব নয়। এই আন্দোলন চলবে।

কয়েকমাস গেলেই রাজ্যে পুরভোট। সিএএ-এনআরসি ইস্যু কি সেই ভোটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে?উত্তর মিলবে ভোটের ফলে।