কোন্নগর: যাঁর কাছে মা আছে, সে কখনও গরীব নয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কনের এই উক্তির সঙ্গে নিশ্চয় মোটেও একমত নন হুগলির বাপি দে। তাই বৃদ্ধ অশক্ত মাকে রাস্তায় ফেলে রেখে পালিয়ে গিয়েছেন তিনি। কারণ, মা তাঁর কাছে সম্পদ নয়, বোঝা!

বৃদ্ধার নাম রেণুবালা দে। বয়স ৭৫। বাড়ি হুগলির রিষড়ার বারুজীবী এলাকায়। ছেলে ও পুত্রবধূর সঙ্গে থাকতেন বৃদ্ধা রেণুবালা। তাঁর দাবি, হঠাৎই একদিন ছেলে বলে, মা, বাড়ি ভাড়ার চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। অন্য জায়গায় বাড়ি ভাড়া নিয়েছি। চলো সেখানে যেতে হবে। ছেলের কথায় বিশ্বাস করে বৃদ্ধা একবাক্যে বলে ওঠেন, চল। তিনি তখন কী করে জানবেন, ছেলের মনে অন্য ছক আছে!

বৃদ্ধার অভিযোগ, বাড়ি পাল্টানোর নাম করে তাঁকে কোন্ননগরের নবগ্রাম এলাকায় নিয়ে আসেন ছেলে। তারপর বলেন, মা তুমি এখানে একটু বোসো। আমি আসছি। ব্যাস তারপর উধাও ছেলে! অপেক্ষায় ঠাঁই বসে মা! এক ঘণ্টা, দু ঘণ্টা, তিন ঘণ্টা করতে করতে পেরিয়ে গেছে ২ দিন। শেষপর্যন্ত অসহায় বৃদ্ধাকে একা পড়ে থাকতে দেখে এগিয়ে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁকে মুড়ি জল দেন। তারপর ভগ্নপ্রায় এই স্কুলবাড়িতেই ঠাঁই হয়েছে বৃদ্ধার। অশক্ত শরীরে মার একটাই প্রশ্ন, আমায় দু’বেলা খেতে দিতেও ওদের এত অসুবিধা হত?

ছেলের সংসারে মা বোঝা! যে জন্ম দিল, যে বড় করল, যে হাত ধরে চলতে শেখাল, বলতে শেখাল, তাঁকেই অসহায় অবস্থায় রাস্তায় ছেড়ে চলে গেল ছেলে! বৃদ্ধা মার চোখে জল। লজ্জায় মাথা হেঁট গোটা সমাজের।