রাণা দাস, পূর্ব বর্ধমান: মাইকের ব্যবসার আড়ালে অস্ত্রের কারবার! পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় গৃহস্থ বাড়িতে অস্ত্র কারখানার হদিশ পেল পুলিশ। অস্ত্রের পাশাপাশি উদ্ধার হয়েছে অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম। মূল অভিযুক্ত পলাতক। কারা রয়েছে এর পিছনে, জানতে শুরু হয়েছে তদন্ত। 


খড়ের চালার বাড়ি। সেখানেই মেরামত করা হয় মাইক-সহ বিভিন্ন বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম। অন্তত তেমনটাই জানতেন লোকে। কিন্তু সাদামাঠা সেই গৃহস্থ বাড়ির আড়ালেই আস্ত অস্ত্র কারখানার হদিশ মিলল পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায়।


গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, সোমবার রাতে কাটোয়ার লোহাপোতা গ্রামে, রমজান আলি শেখের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। সেখানে তাঁর মাটির ঘরে ঢুকতেই চোখ কপালে ওঠে তদন্তকারীদের। উদ্ধার হয়, দুটি আগ্নেয়াস্ত্র, ১৭ রাউন্ড কার্তুজ, লোহার পাইপ, স্প্রিং, স্ত্রু, ঝালাইয়ের মেশিন-সহ বিভিন্ন সরঞ্জাম।


যদিও অভিযুক্ত রমজান আলি শেখ পুলিশ আসার আগেই ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেন। পূর্ব বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব দাস জানিয়েছেন অস্ত্র কারখানার হদিশ। অস্ত্র ও তৈরির সরঞ্জাম। কারা করছিল তদন্ত করে দেখছি। 


স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এলাকায় একটি মাইকের দোকান রয়েছে অভিযুক্তর। রাত-বিরেতে তাঁদের বাড়ি থেকে মাইকের আওয়াজ আসত। সবাই জানত মাইক সারানো হচ্ছে। বিদ্যুতের তার ছড়ানো থাকে বলে, ওই ঘরে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হত না।


অভিযুক্তর মা শামিমা বিবির কথায়, কী করত জানি না। মাইক সারানোর আওয়াজ পেতাম রাতে। ওই ঘরে ঢুকতাম না কখনও। যদিও পুলিশ সূত্রে দাবি, রমজান আলি শেখের বাড়ি থেকে যে অস্ত্রের সন্ধান মিলেছে তা এখানে মেলে না।


সম্প্রতি অস্ত্র রাখার অভিযোগে এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়। দু’ হাতে অস্ত্র নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ছবি দেওয়াই কাল হয়েছিল। পুলিশের নজরে আসায় অস্ত্র-সহ গ্রেফতার হয় ওই দুষ্কৃতী। ঘটনায় মানিকতলা থানার পুলিশের হাতে এসেছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। পুলিশের দাবি, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে অস্ত্র কেনাবেচা করছিল দুষ্কৃতীরা। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পোশাক ও হাতঘড়ি দেখে এক দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত করা হয়। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয় একটি আগ্নেয়াস্ত্র। আরেকটি অস্ত্রের খোঁজ করতেই ধৃত জানায়, সেটা রাখা আছে খুনে অভিযুক্ত ভাটপাড়ার এক দুষ্কৃতীর বাড়িতে। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে অবশ্য অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। পলাতক খুনে অভিযুক্ত ওই দুষ্কৃতীও।