অলোক সাঁতরা, মেদিনীপুর : মাঝরাতে খাবারের খোঁজে হাতির হানা লোকালয়ে। মেদিনীপুর সদর ব্লকের গুড়িগুড়িপালে রাতভর তাণ্ডব চালিয়ে ৬টি বাড়ি ভাঙল হাতির দল। পায়ে মাড়িয়ে নষ্ট করল ধানের বীজতলা। সকালে বনকর্মীরা শালবনির জঙ্গলে তাড়িয়ে দেন হাতিগুলিকে। ঘটনায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছে বন দফতর।


খাবারের খোঁজে লোকালয়ে এসে রাতভর দস্যুগিরি চালাল হাতির পাল। ভোরের আলো ফুটতে ধানের বীজতলা মাড়িয়ে নষ্ট করে গ্রাম দাপিয়ে সকলের মনে আতঙ্ক ধরিয়ে দিয়ে জঙ্গলে ফিরল গজরাজ। হাতির পাল তাণ্ডব চালাল মেদিনীপুর সদর ব্লকের গুড়গুড়িপাল এলাকার। রবিবার গভীর রাতে এনায়েতপুরে ঢুকে পড়ে ৬টি হাতি। মাঠে ফসল না-থাকায় তারা সোজা হানা দেয় গৃহস্থের বাড়িতে। ভাঙে বাড়ির দেওয়াল, ধানের গোলা। গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে এরপর পলাশিয়াতে হানা দেয় হাতির পাল।


আর হাতির তাণ্ডবের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। হাতির একটি পাল চাঁদড়া এলাকার জঙ্গল ছেড়ে প্রবেশ করে এনায়েতপুর গ্রামে। হানা দিয়ে ধানের গোলা ও একটি বাড়ির দেওয়ালের বেশ কিছু অংশ ক্ষতিও করে। সেখান থেকে তাড়া খেয়ে পাশের গ্রাম পলাশিয়াতে প্রবেশ করে চারটি বাড়ি ভাঙে হাতির পাল। কোনোরকমে প্রাণে বাঁচেন বাড়ির সদস্যরা। স্থানীয় বাসিন্দা অরুন দোলই বলেন, "বাড়িতে শুয়েছিলাম, হঠাৎ শব্দ শুনে জেগে উঠে দেখি পাশের বাড়ি ভাঙছে হাতির পাল। তার কয়েক মিনিট পরই আমার বাড়ির ইঁটের দেওয়াল ভেঙে ফেলে। সঙ্গে সঙ্গে বিছানা ছেড়ে না উঠলে দেওয়াল চাপা পড়ে যেতাম।"


খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বন কর্মীরা। হাতিগুলিকে তাড়িয়ে জঙ্গলে ফেরত পাঠালেও আতঙ্ক থাকছে ফের হানার। সোমবার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি পরিদর্শনে যান গুড়গুড়িপাল ফরেস্টের বনকর্মীরা। জানা যাচ্ছে, হাতির হানায় ক্ষতিপূরণ না পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, "এর আগেও বাড়ি ভেঙেছে, জমির ফসলের ক্ষতি করেছে হাতি। আজ পর্যন্ত কোনও ক্ষতিপূরণ পাইনি।" তবে মেদিনীপুরের ডিএফও সন্দীপ বেড়োয়াল জানিয়েছেন, সরকারী নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে সবাইকে। হাতির পালকে অন্যত্র সরানোর চেষ্টা চলছে।