রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান: বিধানসভা ভোটের পর পুরানো দলে ফিরতে চেয়ে আর্জি জানিয়েছেন একাধিক নেতা। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি ছেড়ে অনেক কর্মী-সমর্থকেরই তৃণমূলে ফিরে আসার খবর সামনে এসেছে। এবার পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে বিজেপি ছেড়ে পুরনো দল তৃণমূলে ফিরলেন শতাধিক কর্মী-সমর্থক। গতকাল কাঁদরা ও রাজুর গ্রামে শিবির করে বিজেপি থেকে আসা কর্মী-সমর্থকদের দলে ফেরানো হয়। 
কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়কের দাবি, দলীয় স্তরে এনিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলেও দলত্যাগীদের জোরাজুরিতে যোগদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। বিজেপির অভিযোগ, ভয় দেখিয়ে এদের দলে ফিরিয়েছে তৃণমূল। একইসঙ্গে করোনা আবহে দূরত্ব বিধি না মেনে কীভাবে জমায়েত হল, তা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করা হবে বলে জানিয়েছে গেরুয়া শিবির।
উল্লেখ্য, ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার যেন হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। দল ছেড়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেতারা। সেইসঙ্গে তৃণমূলের অনেক কর্মীও গেরুয়া শিবিরে সামিল হয়েছেন।
কিন্তু ভোটের পর উলট পুরাণ। এখন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরতে চাইছেন দলের অনেক নেতা-কর্মী। সোনালি গুহ, দীপেন্দু  বিশ্বাস, বাচ্চু হাঁসদা, সরলা মুর্মুর নেতা-নেত্রীরা দলে ফিরতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন। এরইমধ্যে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সব্যসাচী দত্তর মতো বিজেপি নেতাদের কথাতেও জল্পনা বেড়েছে। 


কেতুগ্রামে  তৃণমূলে ফেরা কর্মী পিন্টু দাসের অভিযোগ, বিজেপির কোনও নেতারা এখন আর আমাদের খোঁজ নিচ্ছেন না। বিপদে পাশে নেই। তাই আজ আমরা তৃণমূলে যোগ দিলাম।
কেতুগ্রাম তৃণমূল সূত্রে দাবি, মঙ্গলবার বিজেপি ও কংগ্রেস ছেড়ে প্রায় ৫০০ নেতাকর্মী শাসক শিবিরে যোগ দিয়েছেন।তার মধ্যে ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন, আবার তৃণমূলে ফিরলেন, এমন নেতাকর্মীর সংখ্যা ২০০।


কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ শাহনওয়াজ বলেছেন, এখানকার তৃণমূল কর্মীরা যেভাবে চাপ দিচ্ছিলেন, তাতে বাধ্য হয়ে দলে নিলাম।
যদিও বিজেপির অভিযোগ, ভয় দেখিয়ে দল ভাঙাচ্ছে তৃণমূল। পূর্ব বর্ধমানের বিজেপি শহর সভাপতি অনিল দত্ত বলেছেন, ভয় দেখিয়ে তৃণমূল থেকে আসা বিজেপি কর্মীদের জোর করে যোগদান করিয়েছে। আর করোনা বিধি যেখানে চলছে সেখানে এত লোক কিভাবে একসাথে জড়ো হলো সেটাও প্রশাসনকে দেখার জন্য আমরা বলব।
কেতুগ্রামে তৃণমূলের যোগদান কর্মসূচিতে নিরুদ্দেশ যাত্রা করেছে করোনা সচেতনতা। দূরত্ব বিধি উড়িয়ে হয়েছে বিপুল জমায়েত। বেশিরভাগের মুখে মাস্ক পর্যন্ত ছিল না।