কলকাতা: মুকুল রায়কে ছাড়াই এবার পঞ্চায়েত ভোটের লড়াইয়ে নামছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে মুকুল-পরবর্তী তৃণমূলের প্রথম কোর কমিটির বর্ধিত সভা বুধবার কালীঘাটের বদলে হচ্ছে নজরুল মঞ্চে। মন্ত্রী-বিধায়ক-সাংসদ-জেলার নেতা মিলিয়ে উপস্থিত থাকবেন প্রায় সাড়ে তিন হাজার প্রতিনিধি।
তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, এমপি, এমএলএ, জেলা পরিষদের সবাই হাজির থাকবেন। পঞ্চায়েত প্রধান কর্মাধ্যক্ষ, মেয়র, পুর চেয়ারম্যান শাখা সম্মেলনের প্রধানরাও আসছেন। সংখ্যাটা প্রায় সাড়ে তিন হাজার। মমতার বার্তা যত বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া লক্ষ্য।
একসময় তৃণমূলের সংগঠনের রাশ ছিল মুকুল রায়ের হাতে। ভোট মানেও সেই মুকুল। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। এবার তাঁর না থাকা কি ফ্যাক্টর হবে? তৃণমূলের স্পষ্ট উত্তর না।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, কে কোথায় যাচ্ছে আমরা দেখি না। একজন সৈনিক ছাড়া সবাই যে বলে কোনও গুরুত্ব নেই, এটার কোনও মানে নেই। মাঝে দু’বছর ছিল না, তাতেও তো সভা হয়েছে। তিনি যোগ করেন, এটা একটা টিম গেম। ওয়ান ম্যান শো হতে পারে না। ওটা মমতা পারেন। আমরা টিমওয়ার্কে বিশ্বাস করি।
পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, মুকুল না হয় নেই। কিন্তু, তাঁর প্রভাবও কি থাকবে না? তৃণমূল পুরনো নজির টেনে দাবি করছে, এমন সম্ভাবনা বিন্দুমাত্র নেই। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, প্রণব মুখোপাধ্যায়ের প্রভাব কংগ্রেসে ছিল না যখন তিনি বাংলা কংগ্রেস তৈরি করেন। সোমেন মিত্রর প্রভাব ছিল না, যখন তিনি যুব কংগ্রেস তৈরি করেন।। পেয়াজ আর পেয়াজি এক করে দিচ্ছেন। এটা ঠিক নয়।
মুকুলের প্রসঙ্গ উঠলেই রাজনৈতিক মহলে ওঠে অভিষেকের প্রসঙ্গও। তাঁর ভোটে জিতে আসার প্রসঙ্গ তুলেও এদিন মুকুলকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি পার্থ। বলেন, অভিষেক নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছে। নিজে সাংসদ হয়েছে। মানুষের ভোটে জেতা লোক। অনেকে ভোটে না জিতে নেতা হয়েছিল। এটা খেয়াল রাখতে হবে।
তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, গত এক বছরে মুকুলের সঙ্গে দলের দূরত্ব তৈরি হওয়ার পর যে ক’টি ভোট হয়েছে তাতে তৃণমূলের ভোট বেড়েছে বই কমেনি। কোচবিহার এবং তলমুক দুই লোকসভা উপনির্বাচনেই ভোট বাড়িয়েছে তৃণমূল। মন্তেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রে তো বিরোধীদের জমানত জব্দ হয়েছে। মে মাসে সমতল ও পাহাড় মিলিয়ে যে সাতটি পুরসভায় ভোট হয়, তার মধ্যেও চারটিতেই জয়ী হয় তৃণমূল। অগাস্টে সাতটি পুরসভার ভোটে সাতটিতেই জয়ী হয় তৃণমূল।
মুকুলের যোগ বিয়োগকে গুরুত্ব দিচ্ছে না সিপিএমও। তবে, বুধবারের কোর কমিটির বর্ধিত সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুকুলের দলত্যাগ এবং পঞ্চায়েত নিয়ে কী বার্তা দেন, সেদিকে অবশ্যই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের।