হিন্দোল দে, কলকাতা: বাইক চুরির তদন্ত করতে গিয়ে পর্দা সরল দেড় বছর আগে নরেন্দ্রপুরের বাগানবাড়িতে কেয়ারটেকার দম্পতি খুনের রসস্যের ওপর থেকে। পুলিশ সূত্রে দাবি, জেরায় ধৃতদের মধ্যে একজন দম্পতিকে খুনের কথা কবুল করে।


একেই বলে, কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে কেউটে! বাইক চুরির মামলায় ধৃতকে জেরা করতে গিয়ে প্রায় দেড় বছর আগের জোড়া খুনের ঘটনার রহস্যের কিনারা! ২০১৯-এর ৩০ জুলাই দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার তিউড়িয়ায় এক বাগানবাড়িতে খুন হন কেয়ারটেকার দম্পতি। বাথরুমে দু’টি ট্রলি ব্যাগের ভিতরে উদ্ধার হয় প্রদীপ বিশ্বাস ও আলপনা বিশ্বাসের মৃতদেহ। প্রথমে তদন্তে করে নরেন্দ্রপুর থানা। পরে তদন্তভার নেয় সিআইডি। কিন্তু কারা খুন করল, কেন খুন করল, সে রহস্য উন্মোচন হয়নি।

এরপরের ঘটনা ২০২১-এর ৪ ফেব্রুয়ারির। পুলিশ সূত্রে খবর, বাইক চুরির অভিযোগে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ গ্রেফতার করে তিউড়িয়ার বাসিন্দা যুবক সৌরভ মণ্ডলকে। তাঁর সঙ্গে একই অভিযোগ ধরা হয় আরও ৩ জনকে। সৌরভের কাছ থেকে উদ্ধার হয় ৮টি বাইক ও ১ টি আগ্নেয়াস্ত্র। পুলিশ সূত্রে দাবি, সৌরভের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র কোথা থেকে এল সেই প্রশ্নে সৌরভের সঙ্গীরা জানান, তাঁরা শুনেছেন, সৌরভ তিউড়িয়ায় এক দম্পতির খুনের কেসে জড়িত। এরপর সৌরভকে দীর্ঘ জেরা শুরু করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে দাবি, জেরার মুখে ভেঙে পড়ে সৌরভ ওই দম্পতিকে খুনের কথা কবুল করে।

কিন্তু দেড় বছর আগের সেই খুনের মোটিভ কী? পুলিশ সূত্রে দাবি, সৌরভ জেরায় জানিয়েছেন, তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে আলপনা বিশ্বাসের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। একদিন প্রদীপ সৌরভের বন্ধু ও আলপনাকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলেন। এরপর ওই যুবককে মারধর করেন প্রদীপ। পুলিশ সূত্রে দাবি, এরপরই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ২০১৯-এর ২৮ জুলাই ওই দম্পতিকে খুন করেন সৌরভ ও তাঁর বন্ধু।

দু’টি ট্রলি ব্যাগে জোড়া মৃতদেহ ভরে অন্যত্র ফেলে দেওয়ার ছক ছিল অভিযুক্তদের। কিন্তু ট্রলি ব্যাগ বয়ে নিয়ে যেতে অসুবিধা হওয়ায় তাঁরা বাগানবাড়িতেই তা ফেলে যান। সৌরভকে গ্রেফতার করা হলেও তাঁর সেই বন্ধু এখনও পলাতক। তাঁর খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।