রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ: সরকারি বিধি ভেঙে ২ জায়গা থেকে বেতন নেওয়ার অভিযোগে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষকে শোকজ করলেন বিডিও। একদিকে, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হিসেবে সাম্মানিক ভাতা, অন্যদিকে স্কুল শিক্ষকের বেতন। সরকারি বিধি ভেঙে দুই-ই নিয়ে চলেছেন মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা দু নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ। এরজন্যই তাঁকে শোকজ করলেন বিডিও। বিডিওর বিরুদ্ধে দুর্নীতির পাল্টা অভিযোগ এনেছেন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ। এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।


সরকারি বিধি ভাঙার অভিযোগে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষকে শোকজ করলেন বিডিও। সরগরম মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গা দু’নম্বর ব্লক।


উল্লখ্য, আবুল বাশার মণ্ডল, পেশায় ২৪ নম্বর কাশীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। সেইসঙ্গে তিনি বেলডাঙ্গা দু নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ। বেলডাঙ্গা ২ নম্বর ব্লকের বিডিওর অভিযোগ, ২০১৮ সালের নভেম্বর মাস থেকে ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের সাম্মানিক ভাতা হিসেবে ৭৭ হাজার ৫০০ টাকা তুলেছেন আবুল বাশার। সেই সঙ্গে শিক্ষক হিসেবে প্রতি মাসে ২৮ হাজার ৯০০ টাকা বেতনও তুলেছেন। 


বেলডাঙ্গা ২ নম্বর ব্লকের পূর্ব সার্কলের স্কুল পরিদর্শকের অফিসে দেওয়া চিঠিতে বিডিও লিখেছেন, এই ঘটনা, ১৯৭৫ সালের পশ্চিমবঙ্গ পঞ্চায়েত আইনের ৪ এর ৬ ধারার ঘোর পরিপন্থী। ১৯৭৩ সালের পঞ্চায়েত আইনে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ রয়েছে।


শোকজের মুখে পড়ে টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিডিওর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেছেন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ। তিনি বলেন, ‘আমার এটা জানা ছিল না। আমি টাকা ফিরিয়ে দেব। পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হিসেবে বিডিওর অনৈতিক কাজ নিয়ে সোচ্চার হয়েছিলাম। বিডিও নিজের ইচ্ছেমতো টেন্ডার করেন। আমি প্রতিবাদ করাতেই এসব করছেন। রাজনৈতিক ভাবে উনাকে পিছন কেউ সমর্থনও করছে।’


এবিষয়ে বিডিও-র বক্তব্য, ‘আইন মোতাবেক কাজ করেছি। আমাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ না করলে সরানো যাবে না, তাই এমন দোষারোপ।’ এই ঘটনায় প্রকাশ্যে বিডিওর পাশেই দাঁড়িয়েছে ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আতাউর রহমান বলেন, ‘এমন ঘটনা সম্পূর্ণ বেআইনি। আইন আইনের পথে চলবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না।’


বিজেপির মুর্শিদাবাদ দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ও বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘বিডিওরা কি জানতেন না দুবছর ধরে এই অনৈতিক কাজ ঘটছে? নাকি কর্মাধ্যক্ষ জানতেন না বিডিওর অনৈতিক কার্যকলাপ? এটা কী ধরনের রাজনীতি? তাঁরা কি কর্মাধ্যক্ষ হয়েছেন শুধুমাত্র বেতন নেওয়ার জন্য?’


পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নিজের প্রতিশ্রুতিমতো টাকা ফিরিয়ে দেন কিনা, এখন সেটাই দেখার।