মুর্শিদাবাদ: ব্রিজের তলা দিয়ে খালটা বয়ে যেত, সেভাবে কারও চোখেও পড়ত না! অথচ সেই খালটার দিকেই আজ সবার নজর। অভিশপ্ত খালটাই অসংখ্য মৃত্যুর সাক্ষী! সেই খালেই সলিল সমাধি বহু বাসযাত্রীরা!
সোমবার সকালে মুর্শিদাবাদের দুর্ঘটনার খবর কলকাতায় আসতে এতটুকুও দেরি হয়নি। খবর আসতেই তৎপরতা শুরু হয়ে যায় প্রশাসনিক মহলে। খুলে দেওয়া হয় হেল্পলাইন:০৩৪৮-২২৫৭৪০০।
পুলিশ-প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। নেতাজি ইন্ডোরে সরকারি অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই হতাহতদের পরিবারের প্রতি আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেন তিনি।
প্রথম ঠিক হয়, বিভাগীয় সচিবকে নিয়ে দৌলতাবাদ যাবেন পরিবহণমন্ত্রী। সঙ্গে যাবেন এডিজি ট্রাফিক। কিন্তু নিজেই দুর্ঘটনাস্থলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইমতো এদিন দুপুরে হেলিকপ্টারে করে বহরমপুর পৌঁছন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, বিধায়ক মহুয়া মৈত্র এবং পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর দুর্ঘটনাস্থলে যান মুখ্যমন্ত্রী। খতিয়ে দেখেন উদ্ধার কাজ।
বিকেলের দিকে বাসটির অধিকাংশ অংশ জলের ওপরে তোলা সম্ভব হয়। বেরিয়ে আসে একের পর এক যাত্রীর মৃতদেহ। তখনও সার্কিট হাউস থেকে সমানে খোঁজখবর নিচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গোবরা খাল থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে দেহগুলি পাঠানো হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সন্ধে সাড়ে ৬ টা নাগাদ সেখানে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী।
হাসপাতালে তখন তিল ধারনের জায়গা নেই। প্রিয়জনের পরিণতি জানতে সবাই সেখানে। কে কার স্বজন--একের পর দেহ দেখে সবাই তখন দিশেহারা। মাইক হাতে তুলে নিয়ে স্বজন হারানো মানুষগুলোর পাশে থাকার আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী।
মন্ত্রী ও আধিকারিকদের দায়িত্ব বণ্টন করে রাতে হাসপাতাল ছাড়েন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, দৌতলাবাদে বাস দুর্ঘটনার কারণ জানতে পুলিশ এবং পরিবহণ দফতরকে যৌথভাবে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। দুর্ঘটনাগ্রস্ত এনবিএসটিসি-র বাসটির ফরেন্সিক পরীক্ষা হবে।