কলকাতা: ভর দুপুরে খাস কলকাতার বুকে এনকাউন্টার! পুলিশ, এসটিএফ-এর সঙ্গে দুষ্কৃতীদের গুলির লড়াইয়ে কেঁপে উঠল নিউটাউনের আবাসন। পঞ্জাবের কুখ্যাত দুষ্কৃতীদের গুলিতে জখম হলেন এসটিএফ-এর এক অফিসার। পাল্টা গুলিতে মৃত্যু হয়েছে দুই দুষ্কৃতীর। আর গোটা ঘটনায় বারবার উঠে আসছে একটা নাম, জয়পাল সিংহ ভুল্লার ওরফে মনোজিৎ সিংহ।


অবসরপ্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টরের ছেলে, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র, নাম করা অ্যাথলিট, সবশেষে গ্যাংস্টার! কোন পরিচয়টা পায়নি এই ভুল্লার? কিন্তু সব কিছুকে ছাপিয়ে পঞ্জাব পুলিশের ডায়েরিতে গ্যাংস্টার হিসেবেই পরিচিত ছিল সে। পুলিশ সূত্রে দাবি, গত ১৫ মে, লুধিয়ানায় গুলি করে খুন করা হয়েছিল পঞ্জাব পুলিশের দুই এএসআই-কে। সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী পঞ্জাব হোম গার্ডের এক জওয়ানের দাবি, হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল এই ভুল্লারই। তারপর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছিল সে।


সূত্রের খবর, এরপরই কলকাতা পুলিশকে ওর সম্পর্ক জানায় পঞ্জাব পুলিশ। আজকের এনকাউন্টারে মৃত্যু হল সেই ভুল্লার ও তার সঙ্গী জসপ্রীত সিংহ জাসসির।


পুলিশ সূত্রে দাবি, ২০১৬ সালে পঞ্জাবের ভাটিন্দারে শের খুব্বা নামে ভুল্লারের এক বন্ধু এনকাউন্টে মারা যান। এর বদলা নিতে ওই বছরেই হিমাচল প্রদেশে যশবিন্দর সিংহ রকি নামে অপর গোষ্ঠীর গ্যাংস্টারকে খুন করে এই ভুল্লার। হিমাচল প্রদেশেই ৪০-এর বেশি খুন, তোলাবাজি, অপহরণের অভিযোগ ছিল তার নামে। তাছাড়াও পাতিয়ালাতে একটি ব্যাঙ্ক ডাকাতির ঘটনাতেও নাম জড়ায় ভুল্লারের। এছাড়াও একটি ব্যাঙ্ক থেকে ৩০ কেজি সোনা লুঠেরও অভিযুক্ত ছিল সে।


একজন পুলিশ কনস্টেবলের ছেলে কীভাবে ডন হয়ে উঠতে পারেন, তা দাউদ ইব্রাহিমের জীবনে দেখে জানতে পেরেছে গোটা বিশ্ব। সবাই ডন হয় না। কিন্তু একজন পুলিশের ছেলে কীভাবে গ্যাংস্টার হয়ে উঠতে পারে, তার হাতেগরম উদাহরণ এই জয়পাল সিংহ ভুল্লার। সেও একজন অবসরপ্রাপ্ত এএসআই-এর ছেলে। শুধু তাই নয়, খেলাধুলাতেও পারদর্শী ছিল ভুল্লার। যে হাত তাকে একসময় হ্যামার থ্রোয়ার হিসেবে সুনাম এনে দিয়েছিল, পরে সেই হাতেই একসময় উঠে আসে আগ্নেয়াস্ত্র! যা থেকে বেরিয়ে আসা গুলিতে বুধবার জখম হলেন এসটিএফ-এর অফিসার।