কলকাতা: শুভেন্দুর পর এবার রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল দলের বিরুদ্ধে মুখ খোলার আজ কলকাতায় বনমন্ত্রীর সমর্থনে পোস্টার ও ফ্লেক্স।


এদিন শ্যামবাজার, গিরিশ পার্ক, কাঁকুড়গাছি, উল্টোডাঙা সহ উত্তর কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সহ "কাজের মানুষ-কাছের মানুষ", "সততার প্রতীক" লেখা পোস্টার দেখা যায়।


নাম না করে রাজীবকে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়। বলেন, ব্ল্যাকমেল করে তৃণমূলে থাকা যাবে না। চোরের মায়ের বড় গলা।


শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে জল্পনার মধ্যেই গতকাল দলের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ করেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার হরিদেবপুরের ধারাপাড়ায় একটি অরাজনৈতিক অনুষ্ঠানে যান হাওড়ার ডোমজুড়ের বিধায়ক। সেখানেই তাঁর গলায় দলের বিরুদ্ধে ঝরে পড়ে ক্ষোভ।


বলেন, যাঁরা যোগ্যতার সঙ্গে কাজ করছেন তাঁরাই প্রাধান্য পাচ্ছেন না। আমাকে কষ্ট দেয় দুঃখ দেয়। যাঁরা ঠান্ডা ঘরে বসে থাকেন তাঁরাই সামনের সারিতে চলে আসছেন। যোগ্যতার সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করেছি। সঙ্গে সঙ্গে পিছনের সারিতে ফেলে দিয়েছে।


এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। আরও বলেন, দক্ষতার সঙ্গে যোগ্যতার সঙ্গে যাঁরা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে চায়, তাঁদেরকে প্রথম সারিতে স্থান দেওয়া হয় না।


এর জেরে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, কখনও রাজীব বলছেন। কখনও অন্যরাও বলছেন। তৃণমূলের সবাই সরব হচ্ছেন। দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায় বলেন, যাঁদের লড়াইয়ে তৃণমূল তৈরি তাঁদের মনের কথা বলেছেন রাজীব।


আক্রমণের মুখে কোথাও কোনও শূন্যতা নেই বলে পাল্টা দাবি করে তৃণমূল শিবির। পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, রাজীব ভাল ছেলে। কাজের ছেলে। কোথাও শূন্যতা নেই।


পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানানোর জায়গা রয়েছে। দলের বৈঠকে এই কথাগুলি বলা যেতে পারে। প্রকাশ্যে বললে দলের ক্ষতি হয়।


বনমন্ত্রীর বক্তব্যের জেরে শুরু হয় দলবদলের জল্পনাও, যা আরও জোরদার হল রবিবার লকেটের মন্তব্যে। বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছন রাজীব বলে এদিনই দাবি করেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। বিজেপি মহিলা মোর্চা সভানেত্রী বলেন, শুধু রাজীব কেন, আরও অনেকেই বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন।


প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, রাজীব তৃণমূল ছাড়বে। তাই এই ধরণের কথা বলছেন। আমাদের দলে সবাইকে স্বাগত। কংগ্রেসের দরজা খোলা আছে।


যদিও রাজীব বলেন, এখনও পর্যন্ত আমি দলের একজন কর্মী। মন্ত্রিসভার একজন সদস্য। আমি এখনো দলের মধ্যে থেকেই কথা বলছি। স্বাভাবিকভাবেই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সব কথা সব জায়গায় বলাই যায়। এর মধ্যে অপরাধের তো কিছু নেই। তবে দলের মধ্যে কিছু কথা হলে আগামী দিনে নিশ্চিত বলব। এভাবে প্রকাশ্যে নয়।