উত্তর ২৪ পরগনা: টাকা খুইয়ে খোয়া গেল প্রাণটাও। ষাটোর্ধ্ব অমিয়কুমার পাল এবং তাঁর স্ত্রী বাসন্তী। দু’জনে মিলে সংসার। হঠাৎ‍ই সেই পরিবারে চরম বিপর্যয়। আত্মীয়দের দাবি, এটিএম থেকে মোটা টাকা লোপাট হয়েছে বুঝতে পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন বৃদ্ধ অমিয় পাল। আর তারপরই মৃত্যু।


ঘটনার সূত্রপাত শনিবার। পরিবার সূত্রে খবর, সে দিন উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা অমিয় পাল বাড়ির কাছের একটি এটিএম থেকে ২ হাজার টাকা তোলেন।

অভিযোগ, তিনি বেরনোর আগেই, আমডাঙার কাছে মীরহাটি এলাকার ওই এটিএমে দুই যুবক ঢুকে পড়েন। দেখে নেয় বৃদ্ধের এটিএম-এর পাসওয়ার্ড।

তাঁদের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে বৃদ্ধের হাত থেকে এটিএম কার্ডটি পড়ে যায়।

অভিযোগ, তখনই কার্ডটি বদলে দেয় দুই যুবক। তারা অন্য একটি এটিএম কার্ড বৃদ্ধের হাতে ধরিয়ে দেয়।  যা তিনি টের পান বাড়ি ফিরে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি কার্ডটি ব্লক করেন।

সোমবার ব্যাঙ্ক খুলতেই, বারাসত শাখায় ছোটেন অমিয় পাল। পাসবই আপডেট করতেই তাঁর চক্ষু একেবারে ছানাবড়া। অ্যাকাউন্ট থেকে ৭৮ হাজার টাকা লোপাট!

পরিবারের দাবি, এর মধ্যে এটিএম থেকে তোলা হয়েছে ৩৮ হাজার টাকা।

আর, অন্য অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়েছে ৪০ হাজার।

অবসরপ্রাপ্ত রাজ্য সরকারি কর্মচারী অমিয় পালের সংসার চলে মূলত পেনশনের উপর নির্ভর করে। তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে এতগুলো টাকা এ ভাবে লোপাট হয়ে যাওয়ায় ভেঙে পড়েন বৃদ্ধ।

পরিবারের দাবি, ব্যাঙ্ক থেকে বেরিয়েই মাথা ঘুরে পড়ে যান অমিয় পাল।

প্রথমে তাঁকে বারাসতের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। সোমবার রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।

পরিবারের দাবি, মীরহাটি এলাকার এটিএমে যদি সেই সময় নিরাপত্তাকর্মী থাকতেন, তা হলে ওই দুই যুবক হয়ত বৃদ্ধের থেকে এটিএম কার্ডটিই হাতাতে পারত না। সেক্ষেত্রে হয়ত এ ভাবে প্রাণটাও যেত না অমিয় পালের।

মঙ্গলবার, মীরহাটির এটিএমের নিরাপত্তাকর্মী অবশ্য দাবি করেন, ওই এটিএমে সবসময়ই কেউ না কেউ পাহারায় থাকেন।

বারাসতের যে ব্যাঙ্কের শাখায় অমিয় পালের অ্যাকাউন্ট, সেই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দাবি,

টাকা লোপাটের অভিযোগ তারা পায়নি। পেলে খতিয়ে দেখা হবে।