সমীরণ পাল, অশোকনগর : কখনও ফোন করে মিথ্যে পরিচয় দিয়ে ব্যাঙ্ক ডিটেইলস হাতিয়ে নেওয়া, কখনও আবার অ্যাপের মাধ্যমে মোবাইল থেকে ব্যক্তিগত তথ্য, পাসওয়ার্ড জেনে টাকা গায়েব করে দেওয়া। অনলাইন প্রতারণা যেন এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। সেরকম আরেকটি ঘটনা ঘটে গেল অশোকনগর হরিপুরে। মঙ্গলবার দুপুরের ঘটনা। অজানা নম্বর থেকে ফোন। নিজেকে একটি মোবাইল কানেকশন পরিষেবাদায়ক সংস্থার কর্মী বলে পরিচয় দেন ফোনের ওপারের ব্যক্তি। তিনি বলেন, ফোনের সিমের জন্য কেওয়াইসি পেন্ডিং আছে। কেওয়াইসি সেদিনই  জমা না করলে সিম ডিঅ্যাক্টিভেট হয়ে যাবে।তারপর তাঁকে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলা হয়। তারপরই অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যায় ৫৬ হাজার ৩0 টাকা । 



রাঘবেন্দ্র নামের ওই ব্যক্তিকে বলা হয় , কেওয়াইসি আপডেট করার জন্য একটি লিঙ্ক দেওয়া হবে। তাতেই ক্লিক করতে হবে। । সেই লিঙ্কে যাওয়ার পরে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করার  মুহূর্তের মধ্যে পরপর তিনবারে মোট ৫৬ হাজার ৩০ টাকা তার ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার একাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যায়।  পুরো ঘটনাটি প্রথমে অশোকনগর থানা এবং পরে  বারাসাত সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।  বেসরকারি সংস্থার কর্মী প্রতারিত রাঘবেন্দ্রর আক্ষেপ,  ডিজিটাল লেনদেনের  উপর দেশে এত জোর দিচ্ছে সরকার,  অথচ সাধারণ- মধ্যবিত্ত মানুষদের জন্য কোনওরকম সর্তকতা নেওয়া হচ্ছে না। প্রতারকরা নিত্য নতুন ফাঁদ পেতে  তাদের সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে।


 



৪ দিন আগে শহরে এই ধরনেরই একটি ঘটনা ঘটে। ব্যাঙ্কিং অ্যাপে কেওয়াইসির নামে অ্যাপ ডাউনলোডের কথা বলে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা গায়েব করার অভিযোগে ৫ জনকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। গ্রাহকের অভিযোগ, তাঁকে ফোন করে ব্যাঙ্কিং অ্যাপের কর্মী পরিচয় দিয়ে কেওয়াইসির জন্য একটি নির্দিষ্ট অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলা হয়। পরামর্শ অনুযায়ী, অ্যাপ ডাউনলোড করে কোড নম্বর বলার পরেই গ্রাহকের বেসরকারি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে ২ লক্ষ ৮২ হাজার ৯৭০ টাকা গায়েব হয়ে যায়। জোড়াবাগান থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। তার ভিত্তিতে ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া থেকে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে লালবাজারের গোয়েন্দা শাখার পুলিশ। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ব্যবসায়ী প্রবীণ কুমার অগ্রবাল গত ৯ তারিখ অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ, তার ফোনে পেটিএম অ্যাপে কেওয়াইসি আপডেট করতে বলা হয়। এরপর হঠাৎই ওই ব্যবসায়ীর কাছে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন আসে। ফোনের ওপার থেকে পেটিএম অ্যাপের কর্মী বলে প্রতারক নিজেকে পরিচয় দেয়। বলে, ওই অ্যাপে যদি কেওয়াইসি আপডেট না হয় তাহলে ব্লক হয়ে যাবে অ্যাকাউন্ট । সঙ্গে সঙ্গে কথার জালে ফাঁসেন ওই ব্যবসায়ী | প্রতারক এর কথায় বিশ্বাস করেন ব্যাবসায়ী , ফোনে ডাউনলোড করেন ' কুইক সাপোর্ট অ্যাপ "। যার মাধ্যমে সহজেই প্রতারক গ্যাং অপারেট করতে পারবে ব্যবসায়ীর ফোন। বেশ কেল্লাফতে। চোখের নিমেষে প্রায় দুই লক্ষ তিরাশি হাজার টাকা গায়েব হয়ে যায় শ্যামবাজারে বেসরকারি ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে |