সোনারপুর: ‘অপারেশন সোনারপুর’ শেষ করতে ডাকাতদলের সময় লেগেছিল মাত্র দশ মিনিট! সামনে এল সেই রূদ্ধশ্বাস ছবি! আড়ালে থেকে যা প্রতিটা মুহূর্ত রেকর্ড করেছিল সোনার দোকানের ‘সিসি ক্যামেরা’!


‘১০ মিনিট ২৮ সেকেন্ডে’র এই ফুটেজ বলছে, ঘড়িতে তখন সন্ধে সাতটা দশ! বিয়ের মরসুমের আগে জমজমাট বিকিকিনি সোনার দোকানে! আচমকাই কাচের দরজা ঠেলে একজনের প্রবেশ! যার কাঁধে কালো ব্যাগ! সঙ্গে সঙ্গে আরও কয়েকজন! তাদের মধ্যে এক যুবক নিজের মুখে রুমাল বাঁধল! তারপরই স্বমূর্তি ধারণ! কারও হাতে আগ্নেয়াস্ত্র। কেউ আবার ব্যাগ থেকে বের করল কাগজে মোড়া চকচকে চপার!

দুষ্কৃতীরা প্রথমেই টার্গেট করে, বৃদ্ধ এই নিরাপত্তারক্ষীকে! তারপর চপার দেখিয়ে, এক ক্রেতাকে সজোরে ধাক্কা। সেই সময় নিজের জায়গায় বসেছিলেন দোকানের মালিক দীপক দেবনাথ। তাঁর দিকে এগিয়ে যায় সশস্ত্র ডাকাতরা। বন্দুকের ইশারায় মালিককে দোকানের এক কোণে যেতে বলে ডাকাতরা! সশস্ত্র ডাকাতদের তাণ্ডবের সামনে তখন সবাই অসহায়! কিছু করা যাবে না বুঝে, ডাকাতদের দেখানো জায়গাতেই চলে যাচ্ছিলেন মালিক। তখনই কিছু বুঝে ওঠার আগেই সজোরে চপারের কোপ! এই দৃশ্য দেখে, দোকানের সবাই তখন ঠকঠক করে কাঁপছেন! এতেই কাজ হাসিল হয়ে যায় দুষ্কৃতীদের। শুরু হয় লকার খোলার চেষ্টা। তার মধ্যেই শোকেস, র‌্যাক থেকে আলমারি সব কিছুই চপারের ঘায়ে গুঁড়িয়ে দিতে শুরু করে ডাকাতরা। বাক্সের ভিতরে রাখা গয়না বের করার মতোও সময় ছিল না দুষ্কৃতীদের হাতে! তাই সেখানেও পড়ে চপারের ঘা!

বাকি ক্রেতারা তখন দোকানের ভিতর প্রাণ হাতে করে দাঁড়িয়ে! কেউ কাঁদছেন, কেউ দোকান থেকে বেরনোর জন্য কাতর আর্তি জানাচ্ছেন। কিন্তু কাউকে যেতে দেয়নি দুষ্কৃতীরা! অস্ত্রের শাসানিতে সবাই বাধ্য হয়েছিলেন মাথা নিচু করে বসে পড়তে! অসহায় আত্মসমপর্ণ! দোকানের কোনও গয়নাই যে তারা ছেড়ে যেতে চায়নি, তা স্পষ্ট হয়েছে ডাকাতদের আচরণেই! এভাবেই প্রায় দশ মিনিট ধরে অবাধে লুঠপাট চালায় সাত জন। তারপর বেরিয়ে যায় ডাকাতরা। সোনারপুর সাক্ষী হয় ভয়াবহ এক অভিজ্ঞতার!