দার্জিলিং ও কলকাতা: দার্জিলিং এখন সরগরম। পাহাড়ে বসে নিরন্তর একে অপরের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিমল গুরুঙ্গ। ইতিমধ্যেই বৃহস্পতিবারের অশান্তির ঘটনায় মামলা রুজু করেছে রাজ্য সরকার। যদিও বিমল গুরুংয়ের দাবি, অশান্তির নেপথ্যে রয়েছে তৃণমূলই। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সভাপতির দাবি, তৃণমূল পাথর ছুড়েছে। ওরা অশান্তি পাকিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য এসব দাবিতে আমল দিতে নারাজ। তিনি জানিয়ে দেন, তৃণমূলের কেউ ওখানে ছিল না। সবাই রাজভবনে ছিল। এভিডেন্স আছে।
সরাসরি বিজেপির বিরুদ্ধে উস্কানির অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, পাহাড় থেকে নেমে সমতলে বৈঠক করে গেল তো। পাল্টা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে বিজেপি। দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ, উন্নয়নের ইচ্ছে থাকলে এখান থেকেই করা যায়। উনি ওখানে গেলেন আগুন লাগাতে। ভাবলেন মিরিকের পর ভয় দেখিয়ে গোটা পাহাড় দখল করবেন। গোর্খাল্যান্ডের দাবির জন্য দায়ী মুখ্যমন্ত্রীর আগ্রাসী নীতি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, অশান্তি আমরা করিনি। যারা ভাগ করছে, তারা।
পাহাড়ে অশান্তি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে কংগ্রেস এবং বামেরাও। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, ভয় পাইয়ে, চটক দিয়ে পাহাড়ের সমস্যা মিটবে না। রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা। আমরা শান্তি চাই। সবপক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে সমাধান আনতে হবে। মোর্চাকে বৈঠকে ডাকতে হবে।
তৃণমূল শিবির থেকে পাল্টা বলা হয়েছে, ২০০৭-এ তৎকালীন বাম সরকার যখন পাহাড় নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিল, তখন কিন্তু তাতে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাকে ডাকা হয়নি! বিমান বসুরা তখন বলেছিলেন, মোর্চা যেহেতু স্বীকৃতি রাজনৈতিক দল নয়, তাই তাদের ডাকা হবে না! তাহলে এখন বিরোধী হতেই কি সুর বদলে গেল সিপিএমের?
এই পরিস্থিতিতে বিরোধীদের উদ্দেশে পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, সাইনবোর্ড উঠে গেছে বলে হঠকারী রাজনীতি উচিত নয়। ঘোলা জলে মাছ ধরতে নামা কিছু লোকের অভ্যেস। নিজের দিকে তাকান। পাহাড়ের উন্নয়ন না করে সমঝোতা করেছেন। কলকাতায় প্রথম পাথর কারা মেরেছিল? বিমানবাবু সিনিয়র পলিটিশিয়ান। আশা করব, সেরকম কথা বলবেন।
তরজা ঘিরে পর্যটনের জন্য পরিচিত দার্জিলিং যেন এখন ফের রাজনীতির আখড়া।