উত্তর ২৪ পরগনা: বাংলার অলিম্পিয়ান সৌম্যজিত ঘোষের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ। শুধু ধর্ষণই নয়, টেবিল টেনিস খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস থেকে গর্ভপাতের অভিযোগ তরুণীর। কমনওয়েলথ গেমসে সৌম্যজিতের ভবিষ্যত প্রশ্নের মুখে।
পরপর দুবার অলিম্পিকে যোগ্যতা অর্জন। সাম্প্রতীককালে বঙ্গ ক্রীড়ায় এই উদাহরণ কম। সেই কীর্তির মালিক টেবিল টেনিস তারকা সৌম্যজিত ঘোষের বিরুদ্ধেই এবার ধর্ষণের অভিযোগ এক তরুণীর। শুধু ধর্ষণই নয়, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস এমনকি গর্ভপাতের অভিযোগও রয়েছে সৌম্যজিতের বিরুদ্ধে। বুধবার বারাসত মহিলা থানায় এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করা হয়। পকসো আইনে মামলা রুজু হয়েছে সৌম্যজিতের বিরুদ্ধে।

ঠিক কী বলেছেন অভিযোগকারিণী? তরুণী বলেছেন, প্রথমে বিয়ের নামে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করে সৌম্যজিৎ। সেই কথা পরিবারকে জানাতে নিষেধ করে। পরে রাজি হয় বিয়ে করতে। তরুণীর অভিযোগ, এরপরও তিন বছর ধরে শারীরিক, মানসিক, আর্থিকভাবে নির্যাতন চলে তাঁর ওপর। তিনি বলেন, ২৮ ফেব্রুয়ারি সৌম্যজিৎ জানায় আমাকে বিবাহ করবে। আমার মায়ের অ্যাকাউন্টে ব্ল্যাকমানি রাখতে চায় সৌম্যজিতের পরিবার। আমার পরিবার সম্মতি দেয়নি।

তাঁর আরও অভিযোগ, সৌম্যজিতের সঙ্গে বিভিন্ন মহিলাদের পরিচয় বাড়ে। একাধিক মহিলাদের সঙ্গে একরাতের সম্পর্ক তৈরি করে সৌম্যজিৎ। এমনকী, সহযোগী খেলোয়াড়দের সঙ্গেও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে সৌম্যজিৎ। অভিযোগকারিণী আরও বলেন, ২৮ ফেব্রুয়ারি আমার পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয়। সম্পর্ক ছেদ করতে হুমকি দেওয়া হয়।
তরুণীর দাবি, সৌম্যজিতের পাশে রয়েছে তৃণমূলের নেতারাও। তিনি বলেন, আমার মা সৌম্যজিতের পরিবারকে জমিও দেয়। ২ লক্ষ টাকা ধারও দেওয়া হয় সৌম্যজিতের পরিবারকে। জার্মানি নিয়ে যেতে চাইত লিভ-ইন করার জন্য। আমার বাবা-মা নিষেধ করেন।

অলিম্পিয়ান সৌম্যজিত এখন কমনওয়েলথ গেমসের আগে শেষ টুর্নামেন্ট খেলতে জার্মানিতে ব্যস্ত। অভিযোগের পর সৌম্যজিতের পাল্টা অভিযোগ, তাঁকে ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছে। অভিযোগকারী তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, প্রথমে বিয়ের ঠিক হলেও পরে বেঁকে বসে সৌম্যজিতের পরিবার। সৌম্যজিতের পরিবারের পাল্টা অভিযোগ, তরুণীর পরিবার বারবার করে টাকা চেয়ে তাঁদের কাছে চাপ দিত।

বৃহস্পতিবার এই মামলায় গোপন জবানবন্দি দেন অভিযোগকারিনী। এদিকে কমনওয়েলথ গেমসের আগে ঘোর বিপাকে অলিম্পিয়ান। সৌম্যজিত ঘোষের বিরুদ্ধে এহেন অভিযোগে নড়েচড়ে বসেছে ভারতের টেবিল টেনিস সংস্থা। সূত্রের খবর, কমনওয়েলথ গেমসের আগে নির্বাসিত হতে পারেন সৌম্যজিত। এই নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে শুক্রবার টিটিএফআইয়ের এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠকে। সেক্ষেত্রে সৌম্যজিতের পরিবর্ত হিসেবে উঠে আসছে শানিল শেঠির নাম।