আউশগ্রাম: পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের সভা থেকে বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তীব্র আক্রমণ করলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘বিজেপি বলছে রাজ্যে ২০০ আসন জিতবে। কী করে আসবেন নরেন্দ্র মোদি? বিজেপিকে মানুষ বিশ্বাস করে না। বিজেপি মানুষের জন্য কোনও কাজ করে না। কৃষকদের ঠান্ডায় রাস্তায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। কৃষকদের উপর কোনও দয়া নেই বিজেপি সরকারের। সোনার ভারত গড়ব বলে অন্ধকারে ডুবিয়ে দিয়েছে। নরেন্দ্র মোদি বড়লোকের দালাল। একের পর এক কয়লাখনি বিক্রি করছে। ২০১৪-য় বলেছিলেন প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা দেব, বছরে ২ কোটি বেকারের চাকরি দেব। মোদি মানুষকে ভালবাসেন না, দেশকে ভালবাসেন না। মোদি যা বলেন, তার উল্টো কাজ করেন।’

মোদিকে তোপ দেগে অনুব্রত আরও বলেন, ‘গত ৮ বছরে দেশের জন্য কী করেছেন একবার বলুন। আবার বলছেন সোনার বাংলা তৈরি করবেন। কেন সোনার গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ তৈরি করতে পারছেন না? ত্রিপুরায় ৮৩৭টি সরকারি স্কুল বিক্রি করেছে বিজেপি সরকার। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় এসে ৬২টি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করেছেন। উন্নয়ন রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে বলে কী ভুল করেছিলাম? বিজেপি ভুল বোঝাতে চেষ্টা করবে, কিন্তু মমতাকে ছাড়বেন না। মমতার হাত ছাড়লে বাংলার ক্ষতি হবে। বিজেপিকে ঠেঙিয়ে পগারপার করে দিন।’

আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিপুল জয়ের কামনায় সম্প্রতি বীরভূমের কঙ্কালীতলা মন্দিরে মহাযজ্ঞ করেন অনুব্রত। যজ্ঞে ব্যবহৃত হয় ১ কুইন্টাল ১১ কেজি বেল কাঠ, ১০০১টা বেলপাতা ৩ টিন ঘি। বিজেপি-র অবশ্য দাবি, এর ফলে কোনও লাভ হবে না।

সম্প্রতি বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়ের ফ্যান ক্লাবের একটি ফেসবুক পোস্ট নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে চাঞ্চল্য তৈরি হয়। দলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন শতাব্দী। তিনি দল ছাড়তে পারেন বলেও জল্পনা তৈরি হয়। এ প্রসঙ্গে অনুব্রত জানান, তাঁর সঙ্গে শতাব্দীর কোনও কথা হয়নি। তাঁর কাছে কোনও অভিযোগ করেননি সাংসদ। শেষপর্যন্ত অবশ্য সুর নরম করে দলেই থেকে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেন এই অভিনেত্রী। এরপরেই তৃণমূলের রাজ্য কমিটিতে জায়গা পেলেন শতাব্দী। রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি হলেন তিনি। সহ-সভাপতি হলেন মোয়াজ্জেম হোসেন ও শঙ্কর চক্রবর্তীও। বিদ্রোহে ইতি টানতেই পুরস্কৃত করা হল বীরভূমের সাংসদকে, ধারণা রাজনৈতিক মহলের।