কলকাতা:   আরও ডানা ছাঁটা হলো আরাবুল ইসলামের।


সপ্তাহ খানেক আগে ভাঙড় কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে আরাবুলকে। ভোটের পরে ভাঙড় বিধানসভা এলাকার উন্নয়নের জন্য কোর কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাতেও ঠাঁই হল না তাঁর। কেন?

তৃণমূল সূত্রের মতে, এর নেপথ্যে একজনই— খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা। স্থানীয় বিধায়ক হিসেবে কলেজ পরিচালন কমিটিতে আরাবুলের নাম তিনি প্রস্তাব করেননি। আবার তাঁর পরামর্শেই ভাঙড়ে উন্নয়ন সংক্রান্ত কোর কমিটিতে সামিল করা হয়নি আরাবুলকে। অথচ আরাবুল এখনও ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। ভাঙড় থেকে ভোটে জেতার পরই রেজ্জাক বলেছিলেন, ‘‘আরাবুলের ব্যাটারি শেষ হয়ে গিয়েছে। আর রির্চাজ হবে না।’’ আর এখন রেজ্জাক খোলাখুলিই বলছেন, তিনি আরাবুলকে ঠুঁটো করে দিতে চান। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘দুষ্টু গরুর থেকে শূন্য গোয়াল ভাল বলে একটি কথা রয়েছে। আমার কমিটিতে দুষ্টুদের কোনও প্রবেশ নেই।’’ ভাঙড়ের উন্নয়নের জন্য যে কোর কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন রেজ্জাক, তাতে ১২ জন সদস্য রাখার কথা বলা হয়েছে। ভাঙড় ১ ও ২ নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত প্রতিনিধি ও স্থানীয় নেতাদের ওই কমিটিতে রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। শাসক দলের নেতাদের কথায়, পুরনো বামপন্থী ধাঁচে এলাকার উন্নয়নের জন্য এই চেষ্টার পাশাপাশি রাজনৈতিক কাঁটা আরাবুলকে সরিয়ে দিতে চাইছেন রেজ্জাক মোল্লা।

রেজ্জাক অনুগামীদের বক্তব্য, এই কাজে মন্ত্রীকে বিশেষ বেগও পেতে হচ্ছে না। কারণ, আরাবুলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বহু অভিযোগ রয়েছে। ভাঙড় কলেজ সংস্কার-সহ এলাকার নানা পরিকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পে আরাবুলের ঘনিষ্ঠদের বরাত পাওয়াটা এক রকম নিয়ম হয়ে গিয়েছিল। তোলা না দেওয়ায় ঠিকাদারকে অপহরণের চক্রান্তের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।  আরাবুলের বিরুদ্ধে নানা বিষয়ে ক্ষোভের কারণে আরাবুলের বিরুদ্ধ-গোষ্ঠীর নেতারা ভোটের আগেই রেজ্জাকের পাশে চলে এসেছিলেন। নির্বাচনে রেজ্জাক জয়ী হওয়ার পরই এই নেতারা আরাবুলকে কোণঠাসা করার খেলায় নেমেছেন। পঞ্চায়েত সমিতিতেও আরাবুল কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। কোনও ভাবে অনাস্থা প্রস্তাব উঠলে তাঁর সভাপতির পদ হারানোর সম্ভাবনাও দেখছেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের একাংশ।

আরাবুল অবশ্য বলেন, ‘‘ভাঙড়ে সব তৃণমূল নেতা-কর্মী রাতারাতি সাধু হয়ে গিয়েছেন! আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে চক্রান্ত করছেন এক শ্রেণির নেতা। দলের উপর আমার ভরসা রয়েছে। আমি আশাবাদী, দলীয় শীর্ষনেতারা বিষয়টি দেখবেন।’’