প্রকাশ সিনহা, কলকাতা: কয়লাকাণ্ডের তদন্তে তাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককের দু’টি অ্যাকাউন্টের লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার জন্য ফিনানশিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিটকে চিঠি দিল সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে এমনটাই খবর। ওই দু’টি অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। সেই জিজ্ঞাসাবাদের পর ব্যাঙ্ককের দু’টি অ্যাকাউন্টের লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করা হবে বলে জানানো হয় সিবিআই-এর পক্ষ থেকে। এবার সেই কারণেই চিঠি দেওয়া হল আর্থিক বিষয়ক তদন্তকারী ইউনিটকে।


কয়লাকাণ্ডের তদন্তে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের পরের দিনই গরু পাচারের তদন্তে বিনয় মিশ্রর বিরুদ্ধে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে খবর, এরপর ইন্টারপোলের সঙ্গে কথা বলে বিনয় মিশ্রের বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস জারি করবেন তাঁরা।


কয়লা,গরু, কোকেন, চিটফান্ড, এইসব ইস্যুতেই সরগরম বাংলার ভোট রাজনীতি। কয়লাকাণ্ডে মঙ্গলবার রুজিরাকে কালীঘাটের বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গরু পাচার কাণ্ডের তদন্তে যুব তৃণমূল নেতা বিনয়ের বিরুদ্ধে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।


সিবিআই সূত্রে দাবি, চার্জশিটে বলা হয়েছে বিনয়ের মাধ্যমে গরু পাচারের কোটি কোটি টাকা হাতবদল হয়েছে। গরু এবং কয়লা, দুই তদন্তেই রাজ্য যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বিনয়কে হন্যে হয়ে খুঁজছে সিবিআই। বারবার হাজিরা এড়ানোয় বিনয়কে পলাতক ঘোষণা করেছে আদালত। বুধবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তরফে আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দেওয়া হয়। 


গরু পাচারকারীদের টাকা কীভাবে বিনয়ের কাছে পৌঁছত? যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সেই টাকা খাটিয়ে কীভাবে বিপুল সম্পত্তি তৈরি করেছেন? বিনয়ের মাধ্যমে কীভাবে অন্যদের কাছে গরু পাচারের টাকা পৌঁছত, সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে বিশদে তা উল্লেখ করা হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে দাবি। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে যুব তৃণমূল নেতা বিনয় ছাড়া আরও কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। সিবিআই সূত্রে খবর, চার্জশিটের পর তারা রেড কর্নার নোটিস জারি করবে। এ বিষয়ে ইন্টারপোলের সঙ্গে কথা বলা হবে।


গত বছরের নভেম্বরে কয়লাকাণ্ডে আয়কর দফতরের তল্লাশি অভিযান শুরু হতেই কলকাতা ছাড়েন বিনয়। সিবিআই সূত্রে দাবি, বিনয় বর্তমানে দুবাইয়ে আত্মগোপন করেছেন। অভিযোগ, তাঁর কাছে অন্য দেশের পাসপোর্ট আছে। যার সাহায্যে তিনি বিভিন্ন দেশে যাতায়াত করছেন। বিনয়কে একাধিকবার নোটিস পাঠিয়েছে সিবিআই। দু’বার উত্তর দিয়ে, হাজিরার জন্য সময় চাইলেও, পরবর্তীতে তাঁর আর কোনও খোঁজ নেই।