কাঁথি: পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির উত্তর দারুয়া গ্রামে একটি বাড়ির মেঝে খুঁড়ে উদ্ধার হল এক মহিলার কঙ্কাল! এ ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। ওই কঙ্কাল যে মহিলার বলে মনে করা হচ্ছে, তাঁর স্বামীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রহস্য দানা বেঁধেছে।

কিন্তু এই কঙ্কাল কার? কীভাবেই বা খোঁজ মিলল?  বাড়িটি নুরজাহান বিবি নামে এক মহিলার। পাশেই তাঁর দাদা শেখ মাজিদের বাড়ি। নুরজাহানের বাড়িতেই থাকতেন তাঁর স্বামী, রাজস্থানের বাসিন্দা শেখ রফিক। সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। এরই মধ্যে একদিন হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান নুরজাহান। দিনটা ছিল ২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর। কাঁথি থানায় দায়ের হয় নিখোঁজ ডায়েরি। ঘটনার পর রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যান নুরজাহানের স্বামী রফিকও। তারপর থেকে পরিত্যক্তই ছিল এই বাড়ি। নিজের বাড়িতে কাজ হওয়ায় শুক্রবার পাশেই বোনের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন দাদা শেখ মাজিদ। প্রথমে বোনের ঘরে ঢোকেন তিনি। তীব্র দুর্গন্ধে তখন ঘরে টেকা দায়। প্রতিবেশীদের ডেকে আনেন নুরজাহানের দাদা। ঘরের মেঝেতে পা দিতেই একটা অংশ কিছুটা বসে যায়। এরপর মেঝে খুঁড়তেই মেলে আস্ত কঙ্কাল।

পরিবারের দাবি, এই কঙ্কাল নুরজাহান বিবিরই। তাঁকে খুন করে দেহ পুঁতে দেওয়া হয়। গোটা ঘটনায় অভিযোগের তির রহস্যজনকভাবে উধাও রফিকের দিকে।

পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানিয়েছেন, পরিবারের সদস্যদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই ছবিটা স্পষ্ট হবে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান উদ্ধার হওয়া কঙ্কালটি মহিলারই। তাহলে কঙ্কালটি কি নুরজাহান বিবিরই? উত্তরের অপেক্ষায় গোয়েন্দারা। ইতিমধ্যে শেখ মাজিদকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। খোঁজ চলছে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যাওয়া নুরজাহানের স্বামীর। যদি নুরজাহান খুনই হয়ে থাকেন, তাহলে কে বা কারা ঘটাল এই কাণ্ড? যদিও পরিবার ও প্রতিবেশীদের অভিযোগ,  রফিকই খুন করে নুরজাহানের দেহ পুঁতে দিতে যায়। কারণ যদি তা না-ই হয়, তাহলে কেন নুরজাহান নিখোঁজ হওয়ার পর রহস্যজনকভাবে উধাও তাঁর স্বামী? উঠছে একাধিক প্রশ্ন।

তবে যা-ই ঘটে থাকুক না কেন, গোটাটাই যে পূর্বপরিকল্পিত, তা একপ্রকার নিশ্চিত পুলিশ। কারণ, ঘরে মিলেছে বালি, যা দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, প্রথমে খুন তারপর প্রমাণ লোপাটের জন্যই মাটি খুঁড়ে দেহ পুঁতে দেওয়া হয়। কিন্তু গোটাটাই কি একজন ব্যক্তির কাজ, নাকি ঘটনায় জড়িত আরও কেউ? সূত্র সন্ধানে মরিয়া তদন্তকারীরা।