কলকাতা:  রাজ্য জুড়ে ভ্যাকসিনের সঙ্কটের মধ্যেই এল আরও টিকা। রাজ্যে এল আরও ৩ লক্ষ ৫৬ হাজার কোভিশিল্ড, ১ লক্ষ কোভ্যাক্সিনের ডোজ। কলকাতা পুরসভা, দঃ ২৪ পরগনা, উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় এই ভ্যাকসিন বণ্টন করা হবে।


গতকাল কলকাতা পুরসভার সমস্ত কেন্দ্রে নোটিস দিয়ে কোভিশিল্ডের আকালের কথা জানানো হয়েছিল। আজও কলকাতা পুরসভার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দেওয়া হল না এই ভ্যাকসিন। এদিকে, টিকা নিতে এসএসকেএমে দীর্ঘ লাইন মানুষের। এই লাইনেই এক মহিলাকে ঘাড় ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ এক মহিলা পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে। ভ্যাকসিন দুর্ভোগের মধ্যে অব্যাহত রয়েছে রাজনৈতিক তরজা।


জেলায় জেলায় অব্যাহত ভ্যাকসিন ভোগান্তি। দার্জিলিঙের নকশালবাড়িতে ভ্যাকসিনের লাইনে চুড়ান্ত বিশৃঙ্খলা। ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভ্যাকসিন পেতে রাত থেকে হত্যে দিয়ে বসে বহু মানুষ।


শহরজুড়ে আজও ছবিটা একই ছিল। হালতুতে পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র, টিকাকরণ বন্ধের নোটিস। শুধু হালতু নয়। এ ছবি কলকাতা পুরসভার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। জোগান নেই। তাই শনিবারও কোভিশিল্ডের কোনও ডোজ দেওয়া হয়নি। নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে সে কথা। 


যেমন সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার লাগোয়া পুরসভার এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। তালা ঝুলছে এখানে। এই যখন পরিস্থিতি, তখন ভিড় বাড়ছে শহরের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে। ভ্যাকসিনের একটা ডোজ পেতে তীর্থের কাকের মতো অবস্থা। এসএসকেএম হাসপাতালে রাত থেকেই পড়ছে মানুষের লাইন।


ভ্যাকসিনের লাইনে দাঁড়িয়েই আবার নিগ্রহের শিকার হলেন কেউ কেউ। চল্লিশোর্ধ্ব এক মহিলাকে ঘাড় ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক মহিলা পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে। যাদবপুরের বাসিন্দা এই মহিলার অভিযোগ, ফর্ম ফিলআপের জন্য ওই মহিলা পুলিশকর্মীর কাছে পেন চাইলে, নিগৃহীত হন তিনি।


এই যখন চলছে, তখন হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। তাঁকে দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়েন এই মহিলা। সব শুনে মদন মিত্র ওই মহিলাকে সাহায্য করতে এগিয়ে এলেও, ফের ওই পুলিশকর্মীর সঙ্গে বিবাদ বাধে মহিলার।


শেষ মেশ ফর্ম ফিলআপ হলেও, অসুস্থ হয়ে পড়ায় এদিন আর ভ্যাকসিন নিতে পারেননি ওই মহিলা। এদিকে, ভ্যাকসিনের আশায় এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে এসেও, পেলেন না বেলেঘাটার বাসিন্দা এই মহিলা


বেলেঘাটা বাসিন্দাবাসন্তী দেবনাথ বলছেন, পুরসভায় টিকা নেই বলে মা-বোনকে নিয়ে এনআরএসে আসেন, মা-বোন সুযোগ পান, আমি পেলাম না। ভ্যাকসিন পেতে দুর্ভোগ বাড়ছে মানুষের। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তরজাও। 


কলকাতা পুরসভা প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, মমতা কিনতে চাইলে দেয়নি, এখন দিচ্ছে না, কোভিশিল্ডের সেকেন্ড ডোজ ১ লক্ষর ওপর পাওনা, মোদি দায়িত্ব নিয়েছেন উনি দিন। 


বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কথায়, কোনও রাজ্যের সমস্যা হচ্ছে না, এখানেই কেন হচ্ছে। এ দিকে, গিরিশ পার্ক এলাকায় পুরসভার একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দেখা গেল সেখানে টিকাকরণ কর্মসূচি চলছে। দেওয়া হচ্ছে কোভ্যাক্সিনের ডোজ। তবে আপাতত সাময়িক স্বস্তি দিয়ে কিছু ডোজ ঢুকেছে। আগামিকাল থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।