জয়দীপ হালদার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ইয়াস ও কটালের জোড়া ফলায় বিপর্যস্ত সুন্দরবন। এখনও জলমগ্ন নামখানার বিস্তীর্ণ এলাকা। নোনা জলে ডুবেছে চাষের জমি। নষ্ট হয়েছে ফসল। এই পরিস্থিতিতে সরকারি সাহায্যের অপেক্ষায় রয়েছেন কৃষকরা। বিডিওর আশ্বাস, দুয়ারে ত্রাণে  মিলবে ক্ষতিপূরণ।


জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ। সঙ্গে ইয়াস, দোসর ভরা কটাল। বাঘ, কুমিরের সঙ্গে বাস করতে আর ভয় পান না সুন্দরবনবাসী। তবে ইয়াস, কটালের জোড়া ফলায় এখন বিধ্বস্ত তাঁরা।


ইয়াস, কটালের জলের তোড়ে এখনও প্লাবিত সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা। বাঁধ ভেঙে, বাঁধ উপচে ঢোকা নোনা জলে ডুবেছে নামখানা, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমার চাষ জমি। সমস্ত সবজি কার্যত নষ্ট হয়ে গিয়েছে।  তার জেরেই মাথায় হাত কৃষকদের। 


নামখানার এমনই এক ক্ষতিগ্রস্ত চাষি গণেশ পরিকর বললেন, নোনা জলে সমস্ত সবজি নষ্ট হয়ে গিয়েছে, কোথায় যাব, কী করব বুঝতে পারছি না। এখান থেকে পাইকারি বাজারে সবজি যেত কলকাতায়। এখন সব শেষ হয়ে গেল।


নামখানার নাদাভাঙায় সবজি চাষ হয় বহু বছর ধরে। এখান থেকে সবজি যায় পাইকারি বাজারে। গোটা গ্রামটাই এখন জলের তলায়। আরেক চাষি আশুতোষ দোলুই বললেন, এতদূর জল আসবে ভাবিনি। নোনা জল ঢুকে গেছে। আগামী কয়েক বছর চাষ করা যাবে না।


মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফলানো ফসল চলে গিয়েছে জলের তলায়! জমিতে নোনা জল ঢুকে যাওয়ায় আবার কবে চাষবাস হবে, তাও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না, এই অবস্থায় কী হবে? কী করে সংসার চলবে? সেটাই বুঝে উঠতে পারছেন না ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা। উচ্ছে, ঝিঙে, ঢেঁড়শ, পটল বেগুন নষ্ট হওয়ায় সবজি বাজারেও তার আঁচ পড়তে শুরু করেছে। সবজির দামে আগুন।


এই পরিস্থিতিতে সরকারি সাহায্যের অপেক্ষায় রয়েছেন কৃষকরা। নামখানা বিডিও শান্তনু সিংহ ঠাকুর বলেন,  ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হয়েছে। কৃষক বন্ধু কার্ড থাকলে দুয়ারে ত্রাণের মাধ্যমে আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাবেন ক্ষতিগ্রস্তরা। কৃষি দফতর ক্ষয়ক্ষতি দেখার পর যাদের কার্ড নেই তাদের জন্যও ব্যবস্থা করা হবে।


এখন এই সরকারি সাহায্যটুকুকেই আকড়ে ধরে ফের মূল স্রোতে ফিরতে চাইছেন সব হারানো এই মানুষগুলো।